বিনোদনহোমপেজ স্লাইড ছবি
অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে গেম অফ থ্রোনস এর শেষ সিজনে

মাহমুদুর রহমান: প্রতি বছরের মতো এবারও বৈশাখ এলো। নতুন বছরে নতুন দিনের আশায় দিন গুনছে বাঙালী। নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত শহরবাসী প্রস্তুতি নিচ্ছে নানা উৎসব আয়োজনের। কিন্তু এবারের বৈশাখে চলছে আরেকটি ফিসফাস, আরেকটি গুঞ্জন। কি নিয়ে সেই গুঞ্জন?
আসছে ‘গেম অফ থ্রোনস’ এর শেষ সিজন। ২০১৭ সালের আগস্টে শেষ হওয়া সপ্তম মৌসুমে রেখে গিয়েছিল অনেক প্রশ্ন। সে সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আসছে গেম অফ থ্রোনস। কেবল তাই নয়, ১৪ এপ্রিল শুরু হওয়া এই সিজনই হবে সিরিজটির শেষ মৌসুম।
২০১১ সালে শুরু হওয়া গেম অফ থ্রোনস নজর কাড়ে বিশ্বের নানা প্রান্তের দর্শকের। এককালের জনপ্রিয় চ্যালেন ‘এইচবিও’ তখন ঝিমিয়ে পড়া দশায় জীবিত। সেই চ্যানেলকে আবার জাগিয়ে তোলে এই ধারাবাহিকটি।
মূলত জর্জ আর আর মার্টিনের উপন্যাস থেকে অনুপ্রাণিত এই সিরিজের গল্পটি ‘ফ্যান্টাসি’ জনরার। যেখানে বাস্তবের দুনিয়ার সাথে কিছু পরাবাস্তব গল্প এবং চরিত্র জুড়ে একটি মিশ্র গল্প বলা হয়। যেমনটা আমরা দেখেছি যে কে রাউলিং এর ‘হ্যারি পটার’ সিরিজে। কিন্তু গেম অফ থ্রোনস, এসবের থেকেও বেশি কিছু।
কাল্পনিক মহাদেশ ওয়েস্টরস ও এসস-এর পটভূমিতে আবর্তিত গল্পে গেম অব থ্রোনস-এর কয়েকটি কাহিনিসূত্র ও বিশাল সংখ্যক কুশীলব রয়েছে, তবে এতে তিনটি প্রধান গল্প আবর্তিত হয়েছে। প্রথমটি সাত রাজ্যের লৌহ সিংহাসন, যেখানে রয়েছে দখল বা এর থেকে স্বাধীনতা লাভের লক্ষ্যে কয়েকটি অভিজাত রাজ্যবংশের মধ্যে মৈত্রী ও দ্বন্দ্বের গল্প। দ্বিতীয় গল্পটি সর্বশেষ শাসনকারী রাজবংশের শেষ উত্তরসূরিকে কেন্দ্র করে, যাকে নির্বাসিত করা হয় এবং সে সিংহাসন দখল করতে বদ্ধপরিকর। তৃতীয় গল্পে রয়েছে নাইটস ওয়াচ, একটি দীর্ঘকালস্থায়ী ভ্রাতৃত্ব যারা দেয়ালের উত্তরের বন্য মানুষ ও কিংবদন্তি প্রাচীন জীবদের হুমকির হাত থেকে এই রাজসিংহাসনকে প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত।
অর্থাৎ, কেবল নিছক আধিভৌতিক গল্প নয়, তার সঙ্গে রাজনীতির জটিল অঙ্ক এবং নানা ঘোরপ্যাঁচ নিয়ে আবর্তিত কাহিনী সহজেই আকর্ষণ করে দর্শককে। সেই সঙ্গে এই সিরিজে রয়েছে গল্পের নানা চরিত্রের মাঝে অদ্ভুত সব যৌন সম্পর্কের রসায়ন। রাজবংশের সঙ্গে জড়িত চরিত্রগুলো তাদের উত্তরাধিকারের পথে হাঁটতে হাঁটতে কখনও কৌশলে কিংবা কখনও সত্যিকার প্রেমে নানা সম্পর্ক তৈরি করে।
বর্তমান সময়ের মানুষ কিছু ভিন্ন ধরনের গল্প জানতে চায়। চেঙ্গিস খান কিংবা অটোমান সুলতানদের ইতিহাস নিয়ে তৈরি সিনেমা তো অনেক দেখা হলো। এবার বাস্তবের সাথে কল্পনার মিশেলে তৈরি কিছু গল্প দেখার ইচ্ছা তাদের। সে ইচ্ছাকেই পূর্ণ করেছে গেম অফ থ্রোনস। আর সেটা করতে পেরেছে বলেই রেকর্ড সংখ্যক দর্শক তৈরি হয়েছে এই সিরিজের। সেই সঙ্গে রয়েছে অভিনয় শিল্পীদের দক্ষতা ও কুশলতা।
সিরিজটির কলাকুশলীদের মধ্যে পিটার ডিংকলেজ তার টিরিয়ান ল্যানিস্টার চরিত্রের জন্য ২০১১, ২০১৫ ও ২০১৮ সালে তিনবার নাট্যধর্মী ধারাবাহিকে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার ও ২০১২ সালে একবার সেরা টিভি পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া লিনা হিডি, এমিলিয়া ক্লার্ক, কিট হ্যারিংটন, মেইজি উইলিয়ামস, নিকোলাই কোস্টার-ভাল্টাউ, ডায়না রিগ, ও ম্যাক্স ভন সিডো তাদের স্ব-স্ব চরিত্রের জন্য প্রাইমটাইম এমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
বিভিন্ন সময়ে সমালোচকগণ, গেম অফ থ্রোনস-এ প্রদর্শিত নগ্নতা এবং ভায়লেন্স এর জন্য এর সমালোচনা করলেও দর্শকেরা একে গ্রহণ করেছে সাদরে। এমনকি একটি জনপ্রিয় চরিত্র ‘জন স্নো’-র মৃত্যু দেখানো হলে রীতিমত দর্শকদের চাপের মুখে গল্প বদলে তাকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়। শার্লকের হোমসের পরে এমন পাবলিক ডিমান্ড সম্ভবত কারও তৈরি হয়নি। এতেই বোঝা যায় সিরিজটি কতোটা সফল।