বিশ্লেষণব্যবসা ও বাণিজ্যহোমপেজ স্লাইড ছবি
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি

রাফিউজ্জামান সিফাত: কেএফসি, পিৎজা হাট, নান্দুস, বিএফসি সহ বেশ কিছু নামী দামী রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। অধিকাংশ রেস্টুরেন্টের আউটলেট বন্ধ, পরিসংখ্যান বলছে প্রায় পঁচাশি শতাংশ রেস্টুরেন্টের আউটলেট বন্ধ। কিছু কিছু হোম ডেলিভারির অপশন খোলা রেখেছে। কিন্তু চাহিদা নেই। ক্রেতা নেই, ব্যবসাও নেই। ঘর ভাড়ার টাকাই উঠে আসছে না। কর্মীদের বেতন দিতে পারছে না, চলছে কর্মী ছাঁটাই।
কিছুদিনের মধ্যে রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সাথে জড়িত ষাট শতাংশ কর্মী চাকুরী হারিয়ে বেকার হয়ে যাবে। একই সংকট অন্যান্য দেশেও। তারা কি করছে জানেন? সমগ্র রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে সংকট মোকাবেলায় তারা যুদ্ধে নেমেছে। ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবিদের বাঁচাতে তৈরি হচ্ছে একের পর এক জনকল্যাণমুখী স্কিম, রাষ্ট্রীয় সাহায্য, প্রণোদনা, অফার।
ফোর্বসের রিপোর্টে পড়লাম, যুক্তরাজ্য সরকার আগামী কয়েকমাস যে কোন রেস্টুরেন্টের কাস্টমারের খাবারের বিলের পঞ্চাশ শতাংশ টাকা পরিশোধ করবে। মদ ছাড়া তা সে যাই অর্ডার করুক না কেন, দিনে যতবার খুশি রেস্টুরেন্টে ক্রেতার খাবারের দামের পঞ্চাশ শতাংশ টাকা সরকার পরিশোধ করবে! করোনা পরবর্তী ব্যবসা, চাকুরী টিকিয়ে রাখতে ইংল্যান্ডের ত্রিশ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য প্যাকেজ ঘোষণা দিয়েছে যার ভিতর রেস্টুরেন্ট ব্যবসার জন্য প্রায় সাড়ে ছয়শ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ইংল্যান্ড সরকার রাষ্ট্রীয় এ সাহায্যের নাম দিয়েছে Eat Out To Help Out অর্থাৎ সরকার ক্রেতাকে রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে উৎসাহিত করছে, বিলের টাকার অর্ধেক সরকার দিয়ে দিচ্ছে। এতে করে রেস্টুরেন্টে খাবার খেলে টাকা পয়সার লেনদেন চলবে, ইংল্যান্ডের প্রায় দেড় লক্ষ রেস্টুরেন্টের প্রায় আঠারো লক্ষ কর্মী কাজের সুযোগ পাবে, রেস্টুরেন্ট চালু থাকলে মালিক সাহস রাখবে, ব্যবসা বন্ধ করবে না, বাঁচবে রেস্টুরেন্ট, বাঁচবে মানুষ।
সিম্পল লজিক। আমরা এইসবের কিছুই ভাবছি না। ফেরিঘাটগুলোতে প্রতিদিন ট্র্যাকে পিকআপে পরিবার নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে কর্মীহীন মানুষ। ওদের চাকুরী নেই, রোজগারের পথ নেই, আশা নেই। বন্ধ হচ্ছে স্কুল, বন্ধ হচ্ছে ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ ব্যবসা, বন্ধ হচ্ছে রেস্টুরেন্টস সেদিন আমার এক ফেসবুক বন্ধুর ওয়ালে দেখলাম, অনলাইন অর্ডারের পণ্য ঘরের সামনে রাখা ছিল্, চুরি হয়ে গেছে। এমন কথা আগে শোনা যায়নি। এখন যাচ্ছে, দারিদ্রতা বাড়ছে, মানুষের হাতে টাকা নেই। বেঁচে থাকার পথ নেই।
কিছু পরিবারকে এককালীন কিছু টাকা দিয়ে আঠারো কোটি মুখের মাসের পর মাসের ক্ষুধা মিটবে না। কারো কোন ভ্রূক্ষেপ নেই, ভাবনা নেই। প্রশ্ন নেই, সমাধানের রাস্তা খোঁজার ইচ্ছেও নেই। গরুকে গোরু বানিয়েই কূল পাচ্ছি না, ব্যবসা বাঁচানোর সময় কই। সামনে আরও কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।