প্রযুক্তিহোমপেজ স্লাইড ছবি
আধুনিক ইন্টারনেটের জনক ভিনটন সার্ফের গল্প

এস.কে.শাওন: ইন্টারনেট আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইন্টারনেটের জন্যই পৃথিবী যেন আমাদের হাতের মুঠোয়! সারা বিশ্বে ইন্টারনেট চালু হয় ১৯৬৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর। ইন্টারনেটের চারজন জনকের মধ্যে অন্যতম হলেন ভিনটন সার্ফ। যাকে বলা হয় আধুনিক ইন্টারনেটের জনক।
আমেরিকান এই বিখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী ১৯৪৩ সালের ২৩ জুন জন্মগ্রহণ করেন। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এই ছাত্র গণিতে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করে আইবিএম এ সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। তাছাড়াও ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে মাস্টার ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি ১৯৭২ সালে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।একই বছরে বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন সার্ফ।১৯৭৬ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
তারপর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রোজেক্ট এজেন্সিতে কর্মরত ছিলেন। তাছাড়া কার্ফ বিভিন্ন গ্রুপের উন্নতির জন্য অর্থের যোগান দেন। এর মধ্যে রয়েছে টিসিপি, পিয়ারনেট ও সেটনেট। ১৯৮০ সালে তিনি যোগ দেন এমসিয়াইতে।সেখানে তিনি বাণিজ্যিক ইমেইল পদ্ধতি ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।কার্ফ বিশ্ব মানব সংস্থার একজন কার্যকরী সদস্য ছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি বব কানের সাথে জাতীয় গবেষণা কর্পোরেশনের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে তিনি কাজ করেন ডিজিটাল লাইব্রেরী, রোবট ও গিগাবাইট স্পিড নেটওয়ার্ক নিয়ে।
১৯৯২ সালে সার্ফ এবং কান মিলে ইন্টারনেট সোসাইটি (ISOC)প্রতিষ্ঠা করেন। সার্ফ ছিলেন ইন্টারনেট সোসাইটির প্রথম প্রেসিডেন্ট। ইন্টারনেট সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে ইন্টারনেটের মান, নীতি সম্পর্কিত তালিম দেওয়া। ১৯৯৪ সালে কার্ফ আবারো এমসিয়াইতে যোগদান করেন। তিনি দায়িত্ব পান সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টের। সেখানে তাঁর কাজ ছিল প্রযুক্তির কৌশল সম্পর্কে গাইডলাইন দেওয়া। ১৯৯৭ সালে কার্ফ গ্যালাউডেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টি নির্বাচিত হন।এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বধির এবং যাদের শ্রবণ শক্তি কম তাদের পড়ালেখা করানো হয়। এমনকি সার্ফ নিজেও কানে কম শুনেন।
সার্ফ ২০০৫ সালে গুগল এর ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও পালন করেন। আইসিএনএন প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ দিয়েও সহায়তা করেছেন আধুনিক ইন্টারনেটের এই জনক। ২০১০ সাল থেকে কার্ফ জাতিসংঘের আধুনিক উন্নয়নের জন্য ব্রডব্যান্ড কমিশনের একজন কমিশনারের ভূমিকায় কাজ করেন।
৭৬ বছর বয়সী ভিনটন সার্ফের অর্জনের পাল্লাও বেশ ভারী। তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য পুরস্কার হলো -ন্যাশনাল মেডেল অব টেকনোলোজি এন্ড ইনোভেশন ১৯৯৭, প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রীডম ও টুরিং পুরস্কার ২০০৪, রাষ্ট্রপতি পদক।