প্রযুক্তিহোমপেজ স্লাইড ছবি
ইলেক্ট্রিক গাড়ি সম্পর্কিত যত প্রশ্ন এবং উত্তর

তারেক সরকার: আমাদের অনেকেরই ইলেক্ট্রিক গাড়ির বিপ্লব সম্পর্কে ধারণা কম। আমি নিচে কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেস্টা করছি।
১। ইলেক্ট্রিক গাড়ি কি রেসিং কার হয়? অবশ্যই। টেসলার রোড স্টার সবচেয়ে স্পিডি রেসিং কার।
২। ইলেক্ট্রিক কার এক চার্জে কি চট্টগ্রাম যাওয়া যাবে? বেশির ভাগ ইলেক্ট্রিক কার এখন ৩০০ কি:মি: রান করে। হয়ত ১০০০ কি:মি: কার বাজারে কয়েক বছরের মধ্যে চলে আসবে।
৩। ইলেক্ট্রিক কার দীর্ঘ সময় চার্জ করার সময় কোথায়? ইলেক্ট্রিক কার যারা চালায় তাদের একটা অভ্যাসের মধ্যে চলে আসে। তারা কাজ থেকে বাসায় ফিরে গ্যারাজে চার্জে দেয়। সকাল বেলা ফুল চার্জ বা ৩০০ কি: মি: যাওয়ার জন্য গাড়ী প্রস্তুত। ভারত, চায়না ও অনেক দেশে অফিসে গিয়েও গাড়ি চার্জে দেয়া যায়। আমেরিকা ও ইউরোপে রাস্তায় রাস্তায় সুপার চার্জার আছে চা কফির ব্রেকে আধ ঘন্টার চার্জে ২০০ কি: মি: যাওয়ার জন্য গাড়ী প্রস্তুত।
৪। আমার ভুলো মন গাড়ির চার্জের প্লাগ তো লাগাতে মনে থাকবে না তখন কি হবে?প্রথমত: আমরা প্রতিদিন ৩০০ কি:মি: গাড়ি চালাই না। তাই একবার ফুল চার্জ করলে কয়েক দিন চলতে পারে। মোবাইলের মত লো চার্জ ইন্ডি ইন্ডিকেটর গাড়ির দিবে। তাছাড়া গাড়ী মোবাইল ফোনের সাথে কানেকটেড থাকার কারণে চার্জ কন্ডিশান জানা যাবে। ওয়্যারলেস চার্জিং ব্যবস্থা করলে চার্জার লাগাতে ভুলে গেলেও গাড়ি চার্জ হবে।
৫। ইলেক্ট্রিক কার পেট্রোল বা ডিজেল কার থেকে দাম বেশি? ২০২০ সালে এসে দাম কমতির দিকে। ইলেক্ট্রিক কার ৪০% দাম লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারীর কারণে। বর্তমানে কোবাল্ট ফ্রি লিথিয়াম ফেরিক ব্যাটারির দাম কম। টেসলা বর্তমানে ২৫ হাজার ডলারে গাড়ি তৈরিতে কাজ করছে। চায়নার বিওয়াইডি ১২ হাজার ডলারে কার বানাচ্ছে। ১৮ লাখ রুপিতে এক চার্জে ২৫০ কি:মি: চলার জীপ টাটা বানিয়েছে।
৬। ইলেক্ট্রিক কার কি টেকসই? নাকি খেলনা গাড়ির মত ঠুনকো? ইলেক্ট্রিক কারে ১৮টি মুভিং পার্টস আছে অন্যদিকে তেলের গাড়িতে ২ হাজারের উপর মুভিং পার্টস আছে। তাই ইলেক্ট্রিক কার সহজে নস্ট হয় না। হলেও রিপিয়ারে খরচ ও সময় কম লাগে।
৭। ইলেক্ট্রিক কার পরিবেশ বান্ধব এটা কি একটা মিথ? যদি ডার্টি উৎস থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ থেকে গাড়ি চার্জ করা হলে ২০% পরিবেশ বান্ধব আর নবায়নযোগ্য জ্বালানী থেকে চার্জ করা হলে ৫০% পরিবেশ বান্ধব।
৮। ইলেক্ট্রিক গাড়ির ব্যাটারী ছয় মাস বা এক বছর পর পর বদলাতে হয়। খরচ ও পরিবেশের বেশী ক্ষতি হয়? মোবাইল বা ল্যাপটপের লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারী আমরা বছর বছর বদল করি না। তেমনি গাড়ির লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারী এখন ১৫ বছর চলার উপযোগী। সাধারণত ৮ বছর ওয়ারেন্টি পাওয়া যায়। বর্তমানে গাড়ীর লাইফ টাইমের সাথে ব্যাটারী যেন যায় সেভাবে তৈরী করা হচ্ছে এবং ১০ লক্ষ মাইল ও ১৫ হাজার বার ফুল চার্জ করার উপযুক্ততায় আনা হচ্ছে।
৯। তেলের গাড়ী ও ইলেক্ট্রিক গাড়ীর মধ্যে কোন গাড়ির পরিচালনা ব্যয় কম? অবশ্যই ইলেক্ট্রিক কার। তেলের গাড়ীর মত প্রতি বছর দুইবার ৬ হাজার টাকার ইঞ্জিন অয়েল বদল নাই। প্রতি কিলোমিটার যেতে সিএনজিতে খরচ ৫ টাকা, তেলে খরচ ১০ টাকা অথচ ইলেক্ট্রিক গাড়ীতে খরচ মাত্র ১ টাকারও কম। আর নিজের সোলার বিদ্যুৎ থেকে চার্জ করতে পারলে আরো কম খরচ।
১০। ইলেক্ট্রিক গাড়ির ব্যাটারী পরিবেশ দূষণের বড় কারণ? ভুল। ইলেক্ট্রিক গাড়ির সকল ব্যাটারী প্রায় ৯০% রিকভারীতে রিসাইক্যাল করা যায়।