বিনোদনহোমপেজ স্লাইড ছবি
কেন দেখবেন ‘ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন হলিউড’?

রুবেল আহমেদ: সাধারণত রূপকথার গল্প “Once upon a time” দিয়ে শুরু হয়, এই সিনেমা আক্ষরিক অর্থে কোন রূপকথা নয়। আপনার যদি ষাটের দশকের হলিউড সম্পর্কে ধারণা থাকে অথবা ধারণা না থাকলেও এই সময় সম্পর্কে জানতে আগ্রহ থাকে তাহলে এই সিনেমা আপনার কাছে রূপকথাই মনে হবে।
টারান্টিনোর একজন ভক্ত হিসেবে মুভি রিলিজের অনেক আগে থেকেই এর অপেক্ষায় ছিলাম, বসেছিলাম বালতি বালতি রক্ত দেখবো, দেখবো অসাধারণ কিছু ডায়লগ আর টারান্টিনোর কারিশমা। সিট না পাই এই ভয়ে দেড় ঘন্টা আগে সিনেমা হলে যাই, এভেঞ্জারের মতো অতটা হাইপ না থাকলেও হলে দুই চারটা সিট বাদ দিলে হাউজফুল’ই ছিল, হলে ভালো দর্শক উপস্তিতি আমাকে একজন টারান্টিনো ভক্ত হিসেবে আনন্দিত করে।
চলেন এবার মুভির গল্পটা বলি! আরে আসলে এই মুভির কি কোন গল্প আছে? গল্প ছাড়া মুভি ক্যামনে হয়! আসলে হয় যে তার প্রমাণ এই মুভি। মুভিতে টারন্টিনো অসাধারণ সিনেমাটোগ্রাফি, অভিনয় সবই ঢেলেছে শুধু গল্প ঢালতে ভুলে গেছে,আপনি হয়তো বলবেন আরে মুভিটাতো সত্য ঘটনা (শ্যারন টেইটের হত্যাকাণ্ডের) উপর নির্মিত, কিন্তু আসলে সেটা না মুভি দেখলেই বুঝতে পারবেন।
এই মুভির স্টোরিকে আসলে তিনভাগে ভাগ করা যায় এক, লিও ওরফে রিকের ক্যারিয়ারের বর্তমান এবং অতীতের কিছু ফ্লাসব্যাক এবং তার স্টান্টম্যান কাম ড্রাইভার কাম ফ্রেন্ড ব্রাড পিট ওরফে ক্লিফের সাথে তার সম্পর্ক। দুই, ক্লিফের ব্যাক্তিগত জীবন। তিন, শ্যারন টেইটের ব্যাক্তিগত জীবন, ক্যারিয়ার আর পার্টিতে নাচানাচি (শ্যারন টেইটের উপস্তিতি সর্বসাকুল্যে ১৫ মিনিট হবে এর চেয়ে বেশী আশা করেছিলাম)। এই হল মোটামুটি গল্প এর বেশী বললে স্পয়লার হয়ে যাবে।
প্রথমত এই মুভি সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে নির্মিত, তাই অনুরোধ মুভি দেখার আগে অবশ্যই এর পেছনের গল্পগুলো জেনে দেখবেন, শ্যারন টেইটের হত্যাকাণ্ড “ম্যানসন ফ্যামিলি ” ইত্যাদি সম্পর্কে জানলে মুভিটা শেষ পর্যন্ত দেখার ধৈর্য হবে, নইলে এই মুভিকে আপনি দশের মধ্যে ১ ও দিবেন না আর এর পেছনের গল্প জানলেও যে আপনি পাশ মার্ক দিবেন তাও বলতে পারিনা।
দ্বিতীয়ত আপনি যদি টারান্টিনোর অন্যান্য মুভির মতো এই মুভিতে ভায়োলেন্স, রক্ত,অসাধারণ ডায়লগ ইত্যাদি আশা করেন তাহলে আপনি ভুল করবেন, এইসব এই মুভিতে নাই। এটা টারান্টিনোর একটা এক্সপেরিমেন্টাল প্রজেক্ট বলে মনে হয়েছে( ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসে এমন এক্সপেরিমেন্ট কেন তা বুঝি নাই)।
আলাদাভাবে এই মুভির প্রত্যেকটা সিন এন্টারটেইনিং কিন্তু সবগুলোকে একত্রে আনলে একটা আরেকটার সাথে কোন মিল নাই। টারন্টিনোর মুভিতে প্রত্যেক সিনে টেনশন থাকে যা আপনাকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে এই মুভিতে দর্শক ধরে রাখার কোন ভালো ম্যাটারিয়ালস নাই।
ডিরেকশনে টারান্টিনো অস্কার পাবে অনেক দিনের আশা, এই মুভি দিয়ে অস্কার পাওয়া অনেক কঠিন, আর পেলেও একজন টারান্টিনো ভক্ত হিসেবে ততটা তৃপ্তি পাবোনা। পরিশেষে বলি অন্তত লিও আর পিটের অসাধারণ অভিনয় আর দুইজনের রসায়নের জন্য হলেও মুভিটা দেখতে পারেন। তবে দেখার আগে অবশ্যই হোমওয়ার্ক করে নিবেন।