চলতি হাওয়াছুটিহোমপেজ স্লাইড ছবি
টেরি ফক্সের মতো মানুষের কারণেই পৃথিবী সুন্দর মনে হয়

শামীম আহমেদ: আপনি যদি গুগলে কিছু সার্চ করতে যান, দেখবেন টেরি ফক্সকে নিয়ে ডুডল। টেরি ফক্সের নাম আমি প্রথম শুনি ২০১৭ সালে। কানাডার স্কুলের বাচ্চারা মাসব্যাপী টেরি ফক্সকে নিয়ে নানা আয়োজন করে, করে অন্য মানুষরাও। টেরি ফক্স হাড়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার ডান পা হারান মাত্র ১৯ বছর বয়সে, ১৯৭৭ সালে। কিন্তু তারপরই ১৯৮০ সালে ক্যান্সার সচেতনতা বাড়াতে তিনি পুরো ক্যানাডার পূর্ব পশ্চিম জুড়ে দৌড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। নাম দেন ‘ম্যারাথন অফ হোপ’।
তার উদ্দেশ্য ছিল ক্যানাডার জনসংখ্যার সমান অর্থ সংগ্রহ করা যা ক্যান্সার গবেষণায় ব্যয় করা হবে। তখন ক্যানাডার জনসংখ্যা ছিল ২৪ মিলিয়ন। হারানো পায়ের জায়গায় কৃত্রিম পা জুড়ে নিয়ে টেরি ফক্স ১৪৩ দিন ধরে তার দৌড় অব্যাহত রাখেন এবং দৌড়ান প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটার। এর পর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে লাংসে। মৃত্যুর আগে টেরি ফক্স তার প্রত্যাশা মতো ২৪ মিলিয়ন ডলারের কিছু বেশী তহবিল সংগ্রহ করেন। ১৯৮১ সাল থেকে প্রতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর টেরি ফক্স রানের আয়োজন করা হয়। এখন বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশ এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করে। এখন পর্যন্ত প্রায় আটশ মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহিত হয়েছে টেরি ফক্স রান থেকে।
মানবতার সেবায় দৌড়াতে দৌড়াতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবার কয়েক মাস পর ১৯৮১ সালের ২৮ জুন মাত্র ২২ বছর বয়সে মারা যান টেরি ফক্স। কিন্তু টেরি ফক্সের অবদান বিশ্ব সারাজীবন মনে রাখবে। আজকে ক্যান্সার বিষয়ে বিশ্ববাসীর যে সচেতনতা তার পেছনে টেরি ফক্সের ওই ম্যারাথন অফ হোপের অনন্য অবদান আছে। টেরি ফক্সের মতো মানুষের কারণেই পৃথিবী সুন্দর মনে হয়, মানবতা অগ্রসর হয়। টেরি ফক্সের মতো জানা-অজানা সুন্দর মানুষগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা।