জাতীয়হোমপেজ স্লাইড ছবি
ঢাকা লিট ফেষ্ট নিয়ে যত কথা!

ঢাকা লিট ফেস্ট-এর জনপ্রিয়তা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সুবাদে দেশের সাহিত্য অনুরাগী মানুষ যেমন বিদেশী লেখকদের সঙ্গে মুখোমুখি হতে পারছেন তেমনি আর্ন্তজাতিক পরিমণ্ডলে বাংলা সাহিত্যের পরিচিতি প্রশস্ত হচ্ছে। তারপরে ও এই উৎসবের রয়েছে কঠিন সমালোচনা। সমালোচকদের মতে, এটি একটি নব্য-উপনিবেশবাদী প্রচেষ্টা। ব্যক্তিস্বার্থ ও গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষা করতে জাতীয়স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে বাংলাদেশের বুকে তারা উত্তর-ঔপনিবেশিক প্রভাব বইয়ে দিতে চায়।
তিন দিন ব্যাপী এই সাহিত্য উৎসবে প্রতিবছর দেশী-বিদেশী দুই শতাধিক শিল্পী, সাহিত্যিক, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা লিটের্যারি ফেস্টিভ্যাল সংক্ষেপে ঢাকা লিট ফেস্ট হলোএকটি আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসব যা প্রতিবছর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়।
এই আর্ন্তজাতিক সাহিত্য উৎসব প্রথম আয়োজন করা হয় ২০১১ সালে। তখন এর নাম ছিল হে লিটের্যারি ফেস্টিভ্যাল। ২০১৫ সালে এর নাম পরিবর্তন করে নির্ধারণ করা হয় ঢাকা লিটের্যারি ফেস্টিভ্যাল, সংক্ষেপে ঢাকা লিট ফেস্ট। ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এর পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে।
প্রতিবছরের ধারবাহিকতায় এবার ও ৮ নভেম্বর থেকে বাংলা একাডেমি চত্বরে শুরু হয়েছে এ উৎসব। তিন দিনব্যাপী এ আয়োজন শেষ হবে আজ ১০ নভেম্বর।৮ নভেম্বর সকাল ১০টায় এ আয়োজন উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
বিদেশি অতিথিদের মধ্যে এবার অংশ নিচ্ছেন পুলিৎজার বিজয়ী মার্কিন সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ অ্যাডাম জনসন, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক ও কলামিস্ট মোহাম্মদ হানিফ, ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ফিলিপ হেনশের, বুকার বিজয়ী ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক জেমস মিক, ভারতীয় জনপ্রিয় লেখিকা জয়শ্রী মিশরা, লন্ডন ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব রাইটিংয়ের পরিচালক ও কথাসাহিত্যিক রিচার্ড বিয়ার্ড, ভারতীয় লেখিকা হিমাঞ্জলি শংকর, শিশুতোষ লেখিকা মিতালি বোস পারকিন্স, ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল এশিয়ার প্রধান হুগো রেস্টল, মার্কিন সাংবাদিক প্যাট্রিক উইন, লেখক ও সাংবাদিক নিশিদ হাজারি।
বাংলাদেশের সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য সবচেয়ে বড় চমক হিসেবে থাকছেন ভারতীয় লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বাংলা ভাষার লেখকদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা অতুলনীয়। ঢাকা লিট ফেস্টের শেষ দিনে আজ তিনি যোগ দেবেন এই আয়োজনে, কথা বলবেন বাংলাদেশের সাহিত্যপ্রেমীদের সঙ্গে।
দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকা লিট ফেস্টে অংশ নিচ্ছে অস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী টিলডা সুইন্টন। এবারও এসেছেন নিজের লেখালেখি নিয়ে কথা বলতে। তারকাদের তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছেন বলিউড কাঁপানো অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা। লিট ফেস্টে তিনি এসেছেন নিজের আত্মজীবনী নিয়ে কথা বলতেে। এসেছেন অভিনেত্রী ও অ্যাক্টিভিস্ট নন্দিতা দাস। কথা বলেছেন তিনি নারী অধিকার, অভিনয় জীবন ও বহুল আলোচিত হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলন নিয়ে।
বাংলাদেশের প্রায় দেড়শ’ লেখক, অনুবাদক, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ এ আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন । এদের মধ্যে রয়েছেন ড. আনিসুজ্জামান, আফসান চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূর, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কামাল চৌধুরী, আসাদ চৌধুরী, ফকরুল আলম, ইমদাদুল হক মিলন, মঈনুল আহসান সাবের, আলী যাকের, সেলিনা হোসেন, শামসুজ্জামান খান, আনিসুল হক, কায়জার হক, খাদেমুল ইসলাম, অমিতাভ রেজা, মুন্নী সাহা, শাহনাজ মুন্নী, নবনীতা চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
বিশ্বের ২৫টি দেশের দুই শতাধিক সাহিত্যিক, বক্তা, পারফরমার এবং চিন্তাবিদ তিন দিনের এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন। এবারের লিট ফেস্টে আলোচনা, পারফরমেন্স চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজনে শতাধিক সেশন হচ্ছে। আরও আছে আনপ্লাগড মিউজিক কনসার্ট।
বাংলাদেশের সাহিত্য জগতে স্বনামধন্য ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার’ লিট ফেস্টের দ্বিতীয় দিনে ঘোষণা করা হয়েছে। একই দিনে লঞ্চ করা হয় ক্যামব্রিজ শর্ট স্টোরি প্রাইজ।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা একাডেমির আয়োজনে এই উৎসব পরিচালনা করছেন কাজী আনিস আহমেদ, কবি সাদাফ সায্ সিদ্দিকী ও কবি আহসান আকবর। ঢাকা লিট ফেস্টের টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকছে বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউন, কী-স্পন্সর হিসেবে থাকছে ব্র্যাক ব্যাংক। গোল্ড স্পন্সর এনার্জিস, স্ট্রাটেজিক পার্টনার ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং পুরো আয়োজন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে যাত্রিক।