জাতীয়হোমপেজ স্লাইড ছবি
দেশের সীমানা পেরিয়ে যে পাঁচ বাঙালির কীর্তি

মাহমুদুর রহমান: বাংলাদেশের নানা মানুষ দেশকে বিদেশের কাছে তুলে ধরেছেন। নিজেদের কাজের মাধ্যমে দেশের নাম বয়ে নিয়ে গেছেন দেশের সীমানার বাইরে। বর্তমান সময়ে নানা কর্মক্ষেত্রের এমন পাঁচজন ব্যক্তি সম্পর্কে আজ জানবো।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী: বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে আমাদের ক্ষোভের শেষ নেই। নানা কারনে আমাদের সিনেমা পিছিয়ে থাকছে। কিন্তু এরই মাঝে সিনেমা নিয়ে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন যে ক’জন মানুষ তাদের মধ্যে সরয়ার ফারুকী অন্যতম। ভিন্ন ধারার সিনেমা তার। বানিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গির সাথে আছে শিল্পের ছোঁয়া। তার ‘টেলিভিশন’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ‘ডুব’ প্রভৃতি সিনেমা দেশের বাইরে বাংলাদেশের সিনেমাকে উপস্থাপন করেছে। এখনও করে চলেছেন। সামনেই আসছে ‘শনিবার বিকেল’, ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’।
নাফিস বিন জাফর: বর্তমান সময়ে সিনেমায় প্রযুক্তির ব্যবহার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন আর আগের মতো কৃত্রিম সেট তৈরির ঝামেলা করা হয় না। গ্রাফিক্সের সাহায্যে সে কাজ করা হয়। এমনকি গ্রাফিক্সের সাহায্যে এমন অনেক দৃশ্য তৈরি করা যায় যা বাস্তবে করা অসম্ভব। নাফিস সে কাজটিই করেছেন।
বাংলাদেশের ছেলে নাফিসের বসবাস যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলী। ১৯৭৮ সালে জন্ম নাফিসের। চার্লসটন থেকে পড়াশোনা শেষ করে নানা কাজের সাথে একসময় অ্যানিমেশন টিমের সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। নাফিস প্রথম বাংলাদেশী ব্যক্তি হিসেবে ২০০৭ সালে অস্কার পুরস্কার জেতেন। হলিউডের পাইরেটস অফ দ্যা ক্যারিবিয়ান: এট ওয়ার্ল্ড’স এন্ড চলচ্চিত্রে ফ্লুইড অ্যানিমেশনের জন্য সায়েন্টিফিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল বিভাগে ডিজিটাল ডোমেইন নামে ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস ডেভেলপার কোম্পানির হয়ে দুই সহকর্মী ডাগ রোবেল ও রিয়ো সাকাগুচির সাথে নাফিস এ পুরস্কার জেতেন।
ওয়াহিদ ইবনে রেজা: ওয়াহিদ ঢাকায় জন্মগ্রহন করেন ৷ তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর চলচ্চিত্র নির্মাণের উপরে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া থেকে বিএফএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৩ সালে তিনি বার্ডেল এনিমেশন স্টুডিওতে রিক এন্ড মরটি এনিমেটেড সিরিজে প্রডাকশন এসিস্ট্যান্ট হিসাবে কাজ শুরু করার মাধ্যমে হলিউডের প্রোডাকশনে তার যাত্রা শুরু করেন। পরে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার এমিপিস ও ম্যাথোড স্টুডিওস এ কাজ করেন। ২০১৭ সালে তিনি সনি পিকচার্স ইমেজওয়ার্কস এ অ্যাসোসিয়েট প্রোডাকশন ম্যানাজারের পদ পান।
এখন পর্যন্ত তিনি এমি পুরস্কার বিজয়ী রিক এন্ড মরটি এবং গেম অব থ্রোনস এ কাজ করেছেন এছাড়া কাজ করেছেন অস্কার নমিনেশন প্রাপ্ত সিনেমা ডক্টর স্ট্রেঞ্জ, গার্ডিয়ান্স অব দ্যা গ্যালাক্সি ভলিউম টু, ব্ল্যাক প্যান্থার ও অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার এ। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক টুডি অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র সারভাইভিং:৭১ তৈরি করছেন।
সাকিব আল হাসান: বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা তিনি। কেবল বাংলাদেশের না, সাকিব রীতিমত আন্তর্জাতিক তারকা। ক্রিকেট বিশ্ব, বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেছে সাকিবের খেলা। ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রাপ্তি তেমন কিছু না হলেও সাকিবের প্রাপ্তি অনেক। এমন চমৎকার খেলা এ আসরে অনেকে দিলেও ব্যাটে বলে সমান যোগ্যতার পরিচয় আর কারও পক্ষে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
সাকিব অনেকদিন ধরেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ, আইপিএল, বিগ ব্যাশ সব ধরনের খেলায় তার প্রতিভা ফুটে উঠেছে। আর ২০১৯ বিশ্বকাপে তিনি প্রমাণ করেছেন যে সত্যিই তিনি বর্তমান বিশ্বের সেরা অল রাউন্ডার। নিজের পাশাপাশি সাকিব দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন বিশ্বের মঞ্চে।