প্রযুক্তি
নতুন বার্তা প্রযুক্তি পুরষ্কার ২০১৮

আব্দুল্লাহ আল মুনতাসির: ২০১৮ শেষ হয়ে গেলো বেশিদিন হয়নি। ২০১৯ এর আগমনের সাথে আসবে নতুন নতুন মোবাইল ফোন। উঠবে হাজার হাজার সেলফি। বন্দী হবে লক্ষ লক্ষ মনের কথা ছবির ফ্রেম এ। স্মার্ট ফোন শুধু সেলফি তোলার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয় অনেকের হাতে। কিন্তু অনেকের জন্য স্মার্ট ফোন, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির নিদর্শন। চলে যাওয়া ২০১৮ তে বের হওয়া স্মার্ট ফোনের মধ্যে সবচেয়ে আলোচনায় যেগুলো থেকেছে এবং সবার মন যেগুলো কেড়েছে তা নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা। সামর্থ্য ও আকাঙ্ক্ষার সমন্বয়য়ে মোটামুটি সব রকম ক্রেতার জন্যই আমাদের কাছে থাকছে কিছু না কিছু। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক কোন কোন শ্রেণীতে কোন কোন ফোন পারদর্শিতার নমুনা দেখিয়েছে।
বাজেট ফোন “রেডমি নোট ৫” ( ৳১০-২০ হাজার )- কম দাম থেকেই শুরু করা যাক। দশ থেকে বিশ হাজার টাকা দামের মধ্যে গত বছর শাওমি রেডমি নোট ৫ ছিল সবার প্রিয় পছন্দ। ৩০০০+ মিলি এম্পেয়ারের ব্যাটারির সাথে বড় ডিসপ্লের সম্মীলনে ফোনটি ছিল যথেষ্ট আকর্ষণীয়। দামি একটি স্মার্ট ফোনের সাথে সেকেন্ডারি ফোন হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন এই ফোনটি।
গরীবের ফ্ল্যাগশিপ “পোকোফোন এফ ১” ( ৳২০-৩০ হাজার )- যদি বাজেট এর কথাও খেয়াল রাখতে চান আর যুগের সাথেও তাল মিলাতে চান তাহলে শাওমি পোকোফোন আপনার জন্যই। ২০১৮ সালে প্রচণ্ড হাইপে থাকা ফোনটি এই দামের সবচেয়ে ভাল ফোন। বাজারের টপ ব্র্যান্ডের ফ্ল্যাগশিপ ফোনের মতো পারফর্ম করতে না পারলেও টপ ফ্ল্যাগশিপের আমেজ টুকু আপনার কাছে নিয়ে আসতে সক্ষম এই ফোনটি। সর্বাধুনিক প্রসেসর, ৪০০০ মিলি এম্পেয়ারের বিশাল ব্যাটারি, ২০ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা, কি নেই এতে। এই বাজেটে এতো কিছু অফার করলে একে ফ্ল্যাগশিপের নিচে ধরা যায়না।
জ্যাক অফ অল ট্রেডস “ওয়ান প্লাস ৬টি” ( ৳৩০-৫০ হাজার )- দাম, ক্যামেরা, ডিজাইন, ব্র্যান্ড ভ্যালু, ব্যাটারি এমন কোন জায়গা নেই যেখানে বেশ ভাল পারফরমান্স দেয়নি ওয়ান প্লাস ৬টি। সব কিছুতেই পারদর্শী এই ফোনটি গেলো বছরের সেরা ফোন বললেও ভুল হবেনা। মিড রেঞ্জ দামের মধ্যে এর চেয়ে ভাল স্পেসিফিকেশান দিচ্ছে এমন কোন ফোন খুব ভাল করে না খুঁজলে পাওয়া যাবে বলে মনে হয়না। সবকিছুতেই যথেষ্ট পারদর্শী ফোনটি প্রচুর সুনাম কুড়িয়েছে ২০১৮ তে।
ক্যামেরা কিং “গুগল পিক্সেল ৩” ( ৳৫০ হাজার+)- পঞ্চাশ হাজারের উপরে গেলেই বলা যায় সব নামী দামি কোম্পানির ফ্ল্যাগশিপ ফোন শুরু হয়। আপনি যদি ছবির পোকা হয়ে থাকেন, যদি চান বাজারের সবচেয়ে ভাল ক্যামেরা মোবাইলটি হবে আপনার, তাহলে নিঃসন্দেহে পিক্সেল ৩ এর দিকে হাত বাড়াতে পারেন। মাত্র ১২ মেগাপিক্সলের সিঙ্গেল ক্যামেরায় যেমন ছবি উঠবে তা থেকেই বুঝতে পারবেন গুগল এর সফটওয়্যার কি জিনিষ। এই ১২ মেগাপিক্সেলের সিঙ্গেল শুটার দিয়েই অন্য যেকোনো ফোনের ক্যামেরা কে ঘায়েল করতে সক্ষম পিক্সেল ৩ একরকম জাদুর মতোই কাজ করে।
কিডনি কিলার “আইফোন এক্স এস” ( ৳৫০ হাজার+)- কিডনি বিক্রি করে ফোন কিনার ট্রেন্ডের জনক আইফোন। তাঁরা যেন এক অন্য লেভেলেই খেলে যাচ্ছে বরাবরই। কিন্তু বাজারে প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় এখন আইফোনও বাধ্য আপনার টাকা উশুল করে দিতে। আইফোন এক্স এস গত বছরের টাকা উশুল ফোন, যদি আপনি আইফোন জগতের বাসিন্দা হয়ে থাকেন। নিজস্ব এ সিরিজ চিপের সাথে বাজারের সবচেয়ে ভাল ভিডিও ক্যামেরা মিলে এক অসাধারণ আইফোন এক্সপেরিয়েন্স এনে দিবে এ ফোন।
আন্ডার রেটেড আতংক “হুয়াওয়ে মেট ২০ প্রো” ( ৳৫০ হাজার+)- হুয়াওয়ে চায়না তে সর্ব বৃহৎ দেশীও মোবাইল কোম্পানি হলেও বাংলাদেশের বাজারে এর প্রচার প্রসার স্যামসাং/আইফোন এর চেয়ে কমই। কিন্তু প্রচার কম হলে কি হবে, গেলো বছর মেট ২০ প্রো এর সাথে তারা দেখিয়ে দিয়েছে যে তারাও প্রচলিত টপ ফোনকে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সব ধরনের মোবাইল সমালোচকদের নাকের নিচ দিয়ে বের হয়ে যাওয়া এই ফোনটি হুয়াওয়ে এর ঘাঁটি বাংলাদেশে পোক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।
আধ্যাত্মিক যন্ত্র “নোট ৯” ( ৳৫০ হাজার+)- স্যামসাং এর নোট ৯ সম্পর্কে তেমন কিছু বলার চেষ্টা করবোনা কারন এর গুণ বলে শেষ করা সম্ভব না। নোট সিরিজের আগের ফোনটিকেই আরও সুন্দর ভাবে নিয়ে এসেছে এবং মানুষও খুব সহজেই তা গ্রহণ করে নিয়েছে। ইংরেজিতে “এইস ইন দা হোল” বলে একটা কথা আছে। নোট ৯ তারই নিদর্শন। আন্ড্রয়েড দুনিয়ার এলিট ক্লাসের লোকজনই শুধু এর ব্যবহার করে থাকে।