জাতীয়হোমপেজ স্লাইড ছবি
পৃথিবীকে বাঁচাতে এক নতুন ‘আইডিয়া’

মাহমুদুর রহমান: প্লাস্টিক বর্তমান সময়ে পরিবেশের জন্য একটি হুমকির কারন। প্লাস্টিক, পলিথিন আমাদের নিত্য ব্যবহার্য কিন্তু এটি পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ইথিলিনের পলিমার থেকে তৈরি পলিথিন এবং সমগোত্রীয় প্লাস্টিক, সভ্যতার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হলেও এর ক্ষতিকর দিক উঠে আসছে দিনদিন। সস্তা এবং সহজে উৎপাদনের কারণে প্যাকেট বোতল সহ নানা কাজে ব্যবহৃত হয় পলিথিন এবং প্লাস্টিক। একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া এ যৌগ পচনশীল নয়। ফলে মাটির উর্বরতা কমে যাচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সমুদ্রের প্রাণী।
সে ক্ষতি থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে এক নতুন ‘আইডিয়া’ এনেছে নিউ ইয়র্কের একটি প্রতিষ্ঠান। এই ব্যবস্থায় একটি ব্যাগে এক সেট তৈজসপত্র থাকবে। ব্যাগটির আলাদা অংশে থাকবে দৈনন্দিন প্রয়োজনের নানা জিনিস, যেমন কর্ণ ফ্লেক্স, চিজ, রুটি থেকে শুরু করে লিকুইড হ্যান্ড ওয়াস কিংবা ডিটারজেন্ট। মজার ব্যপার হলো এসবই থাকবে ধাতব কিংবা কাঁচের পাত্রে।
প্রতিদিন কিংবা নির্দিষ্ট বিরতিতে একটি ব্যাগে করে প্রয়োজনীয় এসব জিনিস দিয়ে যাওয়া হবে বাড়ির দরোজায়। ব্যবহারের পর প্রয়োজন অনুসারে খালি কৌটো সহ ব্যাগটি আবার তারা ফেরত নিয়ে যাবে। উপযুক্ত মেশিনে এগুলো পরিষ্কার করার পর আবার দিয়ে যাওয়া হবে পন্যসহ। এভাবেই চলতে থাকবে।
পুরনো দিনে কিংবা এখনও অনেক জায়গায় যেমন ভোর সকালে গোয়ালা বা দুধ ওয়ালা দরোজায় দুধ দিয়ে যায়, অনেকটা তেমন হওয়ার কারণে এই ব্যবস্থাকে ‘মিল্কম্যান’ হিসেবে বলা হচ্ছে। আইডিয়াটি নিউ ইয়র্ক এবং প্যারিসে কাজে লাগানো হচ্ছে।
লুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই কাচ এবং ধাতব পাত্র তৈরি করছে যা বহুবার ব্যবহার করা যাবে। পুরনো দিনেও আমরা কাঁচের বয়াম, জার ব্যবহার করতাম। ধাতব পাত্রের ব্যবহারও নতুন কিছু নয়। কিন্তু কেন যেন মানুষ তা থেকে সরে এসেছিল। কিন্তু সস্তা প্লাস্টিকের বর্জ্য যখন আমাদের গ্রাস করে নিচ্ছে তখন আবার কাচ এবং ধাতুর কাছে ফেরত যেতেই হয়।
জরিপ থেকে জানা যায় প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্রের ৪০% এরও বেশি, কেবল ফেলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৯০% কখনও রিসাইকেল করাই হয় না। প্লাস্টিক রিসাইকেল করাও এমন সহজ কিছু নয়। বরং ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক পরিবেশের ক্ষতি করে।
প্লাস্টিক থেকে সরে আসার এই ‘গোয়ালা’ ব্যবস্থা জনপ্রিয় হতে পারে। তবে প্রয়োজন ব্যবস্থাটিকে সহজলভ্য এবং সুলভ করা। কতোটা হবে, তা সময়ই বলে দেবে।