ট্রেন্ডিং খবরপ্রযুক্তি
পয়সা উশুল হোক পোকোফোন এফ ওয়ানে

আবদুল্লাহ আল মুনতাসির: ফ্ল্যাগশিপ মোবাইল কিনতে টাকা তো অনেক লাগে। কিন্তু যদি এমন হয় যে ফ্ল্যাগশিপ মোবাইল না কিনেই ফ্ল্যাগশিপের আমেজ নিয়ে নিতে পারবেন? ঠিক এই জিনিষটিই করে দেখানোর চেষ্টা করেছে চাইনীজ মোবাইল জায়ান্ট শাওমি। তাদের “পোকোফোন এফ ওয়ান” মোবাইলটি গেলো বছরে মিড রেঞ্জের মোবাইল মার্কেটে ঘূর্ণিঝড়ের মতো আসে এবং অন্য সব মোবাইলকে তার আগ্রাসনের শিকারে পরিণত করে। বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো দামের এই ফোনটি বিক্রিও হয়েছে অনেক। আজকে জেনে নেওয়া যাক পোকোফোনের বিস্তারিত কিছু তথ্য।
বিল্ড
বিশেষ ভাবে ভারতীয় বাজারের জন্য ৮জিবি র্যাম নিয়ে ২৫৬ জিবি স্টোরেজের “আরমর্ড” ভার্সনের ব্যবস্থা করেছে শাওমি। এই বিশেষ ভার্সনের জন্য গুণতে হবে অতিরিক্ত কিছু টাকা। তবে পলি কার্বোনেট বা হার্ডেন্ড প্লাস্টিক ব্যাকের পোকোফোন অফিশিয়ালি সারা পৃথিবীতে পাওয়া যাবে ৬জিবি র্যাম নিয়ে ৬৪/১২৮ জিবি স্টোরেজের দুটি ভার্সনে। স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫ প্রসেসরের সাথে ৬জিবি র্যামের সমন্বয় এই ফোনকে করেছে গতিদানব। মি ইউআই ১০ স্কিনে অ্যান্ড্রয়েড ৯ পাই চলবে পোকোফোনে। থাকছে ডুয়াল সিম এর ব্যবস্থা। ডুয়াল সিম আছে বলে যে এক্সটারনাল স্টোরেজ নেই তা নয়। চাইলেই ২৫৬ জিবি পর্যন্ত মাইক্রো এসডি কার্ড যোগ করতে পারবেন। প্লাস্টিকের ব্যাক হওয়ার পরেও ওয়ারলেস চার্জিং এর ব্যবস্থা নেই। এই দামের ফোনে অবশ্য ওয়ারলেস চার্জিং আশা করাও যায়না। ৮.৮ মিলিমিটার পুরুত্তের ফোনের ব্যাক প্লাস্টিকটি ম্যাট স্যাটিন জাতীয় ফিনিশ দেওয়া তাই ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রতিরোধক। আইপি সার্টিফিকেশন না থাকায় পূর্ণ রুপে ওয়াটার প্রুফ বলা যাচ্ছেনা কিন্তু হালকা পানির ছিটায় তেমন কোন ক্ষতি হবে বলে আমরা মনে করিনা। লিকুইড কুলিং সিস্টেম থাকায় অনেক্ষন ব্যবহারেও গরম হওয়ার সম্ভাবনা কম। এছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, ইউএসবি টাইপ সি, স্টেরিও স্পিকারের সাথে হেডফোন জ্যাক তো থাকছেই।
ডিসপ্লে
খরচ কমাতে ওলেড এর জায়গায় আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে পোকোফোনে। ২২৪৬x১০৮০ রেজোলিউশানের ৬.২ ইঞ্চি স্ক্রীনে সবকিছু ঝকঝকেই দেখা যায়। কিন্তু বেযেল কিছুটা বেশি হওয়ায় ফোনের অনুপাতে স্ক্রীন সামান্য একটু ছোট লাগে দেখতে। ইউটিউব ব্যবহারে কোন সমস্যা হবেনা, ফুল এইচডি সাপোর্টই পাবেন কিন্তু নেটফ্লিক্স দেখার ক্ষেত্রে ডিআরএম সার্টিফিকেশনে কিছুটা ঝামেলা থাকায় ১০৮০ রেজোলিউশানে দেখতে পারবেন না। তবে পরবর্তীতে শাওমি চাইলেই সফটওয়্যার আপডেট দিয়ে এটি ঠিক করে দিতে পারবে।
ক্যামেরা
১২ মেগাপিক্সেল এর মেইন ও ৫ মেগাপিক্সেল এর সেকেন্ডারি ক্যামেরা মিলিয়ে ডুয়াল ক্যামেরা সিস্টেম দেখতে পাওয়া যায় শাওমি পোকোফোন এফ ওয়ানে। এই বাজেটের ফোনে সাধারণত আমরা অ্যাভারেজ এর চেয়ে কম কোয়ালিটির ক্যামেরা আশা করি কিন্তু এক্ষেত্রে পোকোফোন আপনাকে চমকে দিবে। হাই ডায়নামিক রেঞ্জ অন অবস্থায় ছবি কিছুটা সফট হলেও যথেষ্ট ডিটেইলস আসবে। রাতের বেলা ছবিতে নয়েজ লক্ষ করা যাবে তাই চেষ্টা করবেন আলোতে ছবি তুলতে। সেলফি ক্যামেরা হিসেবে ২০ মেগাপিক্সেল এর মডিউল ব্যবহার করেছে পোকোফোন।
ব্যাটারি
এই জায়গায় কোন কার্পণ্য করেনি শাওমি। পোকোফোনে পাবেন আপনি ৪০০০ মিলি এম্পেয়ারের বিশাল ব্যাটারি। ওয়ারলেস চার্জিং এর ব্যবস্থা না থাকলেও ফাস্ট চার্জিং ৩.০ এর সহায়তায় অত্যন্ত দ্রুত আপনার ফোন চার্জ হয়ে যাবে। মোটামুটি ব্যবহারের পরও প্রায় দেড় দিনের মতো চার্জ থাকবে এই ফোনে। যেখানে অন্যান্য ফোন প্রতিদিন চার্জ করা লাগে সেখানে আপনি চাইলেই একদিন অন্তর অন্তর চার্জ করতে পারেন।
দাম
বাজেট কিং শাওমি পোকোফোন কিনতে আপনার খরচ হবে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু ঘাবড়ানোর কিছু নেই কারন এটি একেবারেই একটি পয়সা উশুল ফোন।