টেক গেজেটসটেক টকপ্রযুক্তি
ফ্ল্যাগশিপ কিলার এখন চাইনীজ ফোন – শাওমি রেডমি “কে ২০” রিভিউ

আবদুল্লাহ আল মুনতাসির: এবছর ওয়ান প্লাস যেখানে ফ্ল্যাগশিপ কিলার থেকে নিজেই ফ্ল্যাগশিপে পরিণত হয়েছে তাদের ওয়ান প্লাস ৭ প্রো দিয়ে, সেখানে শাওমি সেই ফ্ল্যাগশিপ কিলারের জায়গা দখল করতে বের করেছে রেডমি “কে ২০” বা “মি ৯টি” (ইন্টারন্যাশনাল ভার্সন)। আজকে আমরা এই বাজেট ফোনটি সম্পর্কে জেনে নেব।
– কালারফুল নতুন ডিজাইন
– বাজেট অনুকূল
– প্রিমিয়াম ফিল
ডিসপ্লে
৬.৩৯ ইঞ্চির অ্যামোলেড ডিসপ্লে দেখা যাবে এই ফোনে। সুপার অ্যামোলেডের মতো প্রথম কাতারের ডিসপ্লে না হলেও আইপিএস ডিসপ্লের চেয়ে যথেষ্ট এগিয়ে থাকবে এই ফোনের স্ক্রিন। করনিং গরিলা গ্লাস ৫ এর প্রটেকশন থাকায় স্ক্র্যাচ এর তেমন ভয় নেই। ২৩৪০x১০৮০ রেজোলিউশানের এই ডিসপ্লেটি এজ টু এজ করা হয়েছে এবছরের অন্যান্য ফ্ল্যাগশিপের মতো। ক্যামেরার জন্য কোন নচ রাখা হয়নি তাই ৯১.৯% স্ক্রিন টু বডি রেশিওর ফোনটি দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। গেম খেলতে বা মুভি দেখার জন্য আদর্শ বাজেট ফোন এটি।
বিল্ড
কালারফুল এক অসাধারণ ডিজাইন নিয়ে এসেছে শাওমি তাদের এই ফোনে। পেছনের গ্লাসে যে শেডিং টা করেছে তা ইয়াং জেনারেশনকে খুবই আকৃষ্ট করবে। কার্বন ব্ল্যাক, গ্লেসিয়ার ব্লু ও ফ্লেম রেড এই তিনটি রঙে পাওয়া যাবে এই ফোন। মিড রেঞ্জের ফোন হিসেবে দেওয়া হয়েছে কুয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৭৩০ ও অ্যাডরিনো ৬১৮ জিপিইউ, যা ৬জিবি র্যাম এর সাথে ভালোই পারফর্ম করবে। ৬জিবি বললাম কারণ ইন্টারন্যাশনাল ভার্সনটি শুধু ৬জিবি/৬৪জিবি এবং ৬জিবি/১২৮জিবি এই দুটি অপশনে পাওয়া যাবে। শুধুমাত্র চাইনীজ ভার্সনটির থাকবে একটি অতিরিক্ত ৮জিবি/২৫৬জিবি অপশন। সাথে বলে রাখা ভালো যে এক্সপান্ডেবল স্টোরেজের ব্যবস্থা নেই তাই বুঝে শুনে কোন ভার্সনটি কিনবেন তা ঠিক করবেন। অ্যান্ড্রয়েড ৯ এর উপর মি ইউআই ১০ চলবে এই ফোনে। অন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর থাকছে যা বাজারের সবচেয়ে দামি ফ্ল্যাগশিপগুলোর মতো সুপার ফাস্ট না হলেও, বাজেট ফোন হিসেবে যথেষ্ট ফাস্ট। থাকছে ফেস আনলকেরও সুবিধা।
এইচডি সেটিংসে পাবজি খেলা যাবে এই ফোনে। বলা বাহুল্য যে মিড রেঞ্জের ফোনে আমরা আলট্রা সেটিংস আসা করিও নি। পাবজির মতো গেম হ্যান্ডেল করতে পারলে বাকি গেমগুলোও খেলতে তেমন কোন সমস্যা হবে বলে আমরা মনে করিনা। তবে খেলতে খেলতে কিছুটা গরম হয়ে যেতে লক্ষ্য করা যাবে কিন্তু পারফর্ম্যান্স ড্রপ জাতীয় কোন ইস্যু নেই। আইপি সার্টিফিকেশন নেই তবে হালকা পাতলা পানির ছিটে হজম করতে সমস্যা হবেনা। ইউএসবি টাইপ সি, বটম ফায়ারিং স্পিকারের সাথে থাকছে (ওয়েট ফর ইট) ৩.৫ হেড ফোন জ্যাক যা উপর ওয়ালার রহমত ছাড়া কিছুই না।
ক্যামেরা
৪৮ মেগাপিক্সেলের মেইন ক্যামেরা, ৮ মেগাপিক্সেলের টেলিফোটো এবং ১৩ মেগাপিক্সেলের আলট্রা ওয়াইড মিলিয়ে ট্রিপল ক্যামেরা সেটাপ দেখা যাবে এই ফোনে। যথেষ্ট শার্প ও কালারফুল ছবি উঠবে তবে ডায়নামিক রেঞ্জ অ্যাভারেজ লেগেছে আমাদের। ভিডিও কোয়ালিটি অ্যাভারেজের চেয়ে কিছুটা ভালো। সেলফির জন্য থাকছে ২০ মেগাপিক্সেলের পপ আপ ক্যামেরা যা বের হওয়ার ও ভেতরে যাওয়ার সময় সাউন্ড করে। এই পপ আপ ক্যামেরার জন্যই সম্ভব হয়েছে ৯১.৯% স্ক্রিন টু বডি রেশিও অর্জন করা।
ব্যাটারি ও দাম
৪০০০ মিলিয়াম্প এর ব্যাটারি থাকছে যা ১৮ ওয়াটের কুইক চার্জ এর সাহায্যে ৩৫ মিনিটে ৫০% চার্জ হতে সক্ষম। যথেষ্ট ফাস্ট চার্জিং সুবিধা আছে তবে ওয়ারলেস চার্জিং নেই। ফুল চার্জে ৫ ঘণ্টার স্ক্রিন অন টাইম পাওয়া যাবে অনায়াসে। আন-অফিসিয়ালি চাইনীজ রমের (রেডমি কে ২০) পাওয়া যাচ্ছে ৬জিবি র্যাম, ১২৮জিবি স্টোরেজে যার দাম ৩২ হাজার টাকা। আন-অফিসিয়ালি ইন্টারন্যাশনাল ভার্সন (মি ৯ টি ) পাওয়া যাচ্ছে ৬জিবি র্যাম, ৬৪জিবি স্টোরেজে যার দাম ৩০ হাজার টাকা।