বিনোদন
লোকগানের রাজপুত্রের অজানা অধ্যায়

মোশারফ রাসেল: বারো বছর বয়সেই ওস্তাদ গোপাল দত্তের কাছে সংগীত শিক্ষার হাতেখড়ি। তবে জীবনে প্রথম ওস্তাদ মেনেছেন নিজের মা কে। সংগীতমনা পরিবারে জন্ম, বেড়ে উঠা নেত্রকোনায়। “কংস নদীর তীরে সুর খেলা করে স্বর্বত্র” বলতেন তিনি! আবদুর রশিদ বয়াতি, উকিল মুন্সির মত মানুষরা আগেই সমৃদ্ধ করে গেছেন সেই সুরের আকাশ।
কিশোর বয়সেই গান করতে গিয়ে নজরে পড়েন ওস্তাদ আমিনুর রহমানের। ছয় বছর শিখেন তার কাছে। ওস্তাদ গোপাল দত্তের পরামর্শে ক্ল্যাসিকাল সংগীত শিখতে উড়াল দেন পুনেতে ওস্তাদ ভিজি কার্নাডের কাছে। তেরো বছর করেছেন সাধনা। বারী সিদ্দিকী যতটা না ছিলেন গায়ক, তার চেয়ে বেশি বাঁশরিয়া। নিজেই বলতেন আমার গানের আগে বাঁশি বাজবে এটাই আজীবন চাওয়া।
এতোবছর সংগীত সাধনা করেও বাঁশিই বাজিয়েছেন প্রথম জীবনে। প্রথম নজরে পড়েন হুমায়ূন আহমেদের। “রঙ্গের বাড়ৈ” নামের একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ান তিনি। এরপর নিজের পরিচালিত লোকগল্পের সিনেমা “শ্রাবণ মেঘের দিন” এ বড়সড় সিদ্ধান্ত নেন। নেত্রকোনা অঞ্চলের উকিল মুন্সি আর রশীদ উদ্দিনের গান নতুন সংগীতায়োজনে যোগ করেন সিনেমায়। আর ৭ টি গান গাওয়ান৷ আর বলা বাহুল্য সিনেমার সাথে সাথে বারী সিদ্দিকীও গেঁথে যান মানুষের হৃদয়ে।
এরপর তার হাত ধরে আবার এগিয়ে গেছে নেত্রকোনা অঞ্চলের লোকগান। এরপর আরো কিছু চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন। “নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ” রুপকথার গল্প, মাটির পিঞ্জিরা সহ আরো কিছু চলচ্চিত্রে গান করেছেন। আধ্যাত্মিক গানের প্রবাদপুরুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন নিজেকে। বিশ্বাস করতেন সংগীতের চিরায়ত ধারা গুরু-শিষ্য ধারায়। ইচ্ছে ছিলো প্রতিষ্ঠা করে যাবেন বাউল বাড়ি যেখানে ছেলেমেয়েরা গুরু শিষ্য প্রথায় গান শিখবেন ওস্তাদের কাছে থেকে।
শুরু করেছিলেন বাউল বাড়ির কাজ নিজের গ্রামের বাড়িতে। কিন্তু শেষ করে যেতে পারেন নি। অভিনয়ও করেছেন চলচ্চিত্র এবং নাটকে। তৌকির আহমেদের ” রুপকথার গল্প” চলচ্চিত্রে নিজ চরিত্রে, মাটির পিঞ্জিরা, ঝন্টু মন্টু দুই ভাই চলচ্চিত্রে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এছাড়া “পাগলা ঘোড়া” নামের একটি বাবা দিবসের নাটকে অভিনয় করে ২০১৩ সালে।