খেলাহোমপেজ স্লাইড ছবি
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বনাম ভারতের যত ম্যাচ

এস.কে. শাওন: উপমহাদেশের দলগুলোর মধ্যে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা বিরাজ করবে দর্শকদের মাঝে। এটাই স্বাভাবিক। পাক-ভারত লড়াই দেখার জন্য উদগ্রীব থাকে গোটা বিশ্ব। সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশও এখন ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। কারণ বিশ্বের কোন দলই এখন বাংলাদেশকে দুর্বল প্রতিপক্ষ হিসেবে নেয় না। বাংলাদেশকে সমীহ করেই মাঠে নামে যেকোন দল। এই বিশ্বকাপ আসরসহ মোট ছয়টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। বিগত পাঁচ বিশ্বকাপের মধ্যে ভারতের সাথে মুখোমুখি হয়েছে ৩টি বিশ্বকাপে। আজকের প্রতিবেদনে থাকছে বিশ্বকাপে মুখোমুখি হওয়া বাংলাদেশ বনাম ভারতের ম্যাচগুলোর আদ্যোপান্ত।
২০০৭ বিশ্বকাপ: আগে দু’দল দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেললেও নিজেদের তৃতীয় বিশ্বকাপে ভারতের সাথে প্রথমবার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ১৭ মার্চ উইন্ডিজের পোর্ট অব স্পেনে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। অভিজ্ঞতা ও শক্তিমত্তার বিচারে তারকা ঠাসা দল ভারত ছিল এগিয়ে। কারণ তাদের দলে ছিল শচীন,সৌরভ,রাহুল,যুবরাজদের মতো বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান। ম্যাচটিতে টসে জিতে দলপতি রাহুল দ্রাবিড় ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। সেদিন মাশরাফি,রফিক ও রাজ্জাকের বোলিং তোপে মাত্র ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। মাশরাফির চোখ ধাঁধানো বোলিংয়ে ভারতের টপ অর্ডার ধসে পড়ে! সেই ম্যাচটিতে রফিক ও রাজ্জাক নেন সমান ৩টি করে উইকেট এবং মাশরাফি তুলে নেন ৪ উইকেট। ভারতের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রান ছিল সৌরভ গাঙ্গুলী(৬৬) ও যুবরাজ সিং (৪৭)এর। কয়েকজন এর রান ছিল ফোন নাম্বার এর ডিজিট এর মতো! জবাবে ব্যাট করতে নেমে তামিম,সাকিব ও মুশফিকের হাফসেঞ্চুরীতে ৫ উইকেট হাতে রেখেই ৪৮.৩ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় টাইগাররা। বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়ে ভারতকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। সেই সুবাদে গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যায় টিম ইন্ডিয়া। সম্ভবত এই হারের যন্ত্রণা এখনো পীড়া দেয় ভারতীয় সমর্থকদের!
২০১১ বিশ্বকাপ: ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা থাকে ২০১১ বিশ্বকাপ আসরের আয়োজক দেশ। সেবার ঢাকার মিরপুরে উদ্ধোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি হয়। বাংলার কাপ্তান সাকিব আল হাসান টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। প্রথম ইনিংসে ভারত যেন রানের বৃষ্টি ঝড়ায়! শেবাগ(১৭৫) এবং কোহলির(১০০) ব্যাটিং বীরত্বে ভারত ৩৭০ রানের পাহাড়সম স্কোর গড়ে। ৩৭১ রানের পর্বতসমান টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। তবে এর ধারাবাহিকতা ম্যাচের শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ।২৮৩ রান সংগ্রহ করেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান তামিমের(৭০)। আর দলপতি সাকিবের সংগ্রহ ৫৫ রান। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ টি উইকেট নেন মুনাফ প্যাটেল। ৮৭ রানের ব্যবধানে ভারতের কাছে পরাজিত হয় বাংলাদেশ।
২০১৫ বিশ্বকাপ: বিশ্বকাপের দশম আসরে ১৯ মার্চ মেলবোর্নে কোয়াটার ফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত-বাংলাদেশ। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। রোহিত শর্মার (১৩৭) সেঞ্চুরীতে ৩০২ রানের পুঁজি পায় টিম ইন্ডিয়া। ব্যক্তিগত ৯৪ রানের সময় রোহিত শর্মা রুবেল হোসেনের ফুলটস বলে স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন। কিন্তু থার্ড আম্পায়ার বলটিকে নো-বল হিসেবে গণ্য করে বিতর্কের জন্ম দেন। কারণ টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বলটি কোমরের নিচে ছিল,যা নো-বল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হয় না। বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৯৩ রানে গুড়িয়ে যায় টাইগাররা। আবার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আউট নিয়ে হয় নাটক! টিভে রিপ্লেতে দেখা যায় ফিল্ডার সীমানার দড়িতে পা দিয়ে ক্যাচ ধরেছেন। থার্ড আম্পায়ার সেটিকে ছক্কা না দিয়ে আউটের ঘোষণা দিয়েছেন।অর্থাৎ ম্যাচটি ছিল আম্পায়ারিং বিতর্কিত একটি ম্যাচ।বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলো না হলে হয়তো ম্যাচের ফলাফলটা অন্যরকম হতে পারতো!

২০১৯বিশ্বকাপে চতুর্থবারের মতো দেখা হবে এই নতুন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর। ২ জুলাই বার্মিংহামের এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে মাঠে নামবে দু’দল। দুই দলের সমর্থকেরা হয়তো ম্যাচটি উপভোগ করার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণছে!