বিনোদন
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় সেরা দশটি নাটক

শুধু নির্মাতা নন, একাধিক অভিনয় তারকার জনপ্রিয়তার পিছনে উনার অনেকখানি অবদান। তিনি ৫১ বর্তী, ৬৯, ৪২০ নামে ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করেছেন। আজ উনার ৪৭ তম জন্মদিনে উনার নির্মিত অন্যতম সেরা দশ নাটক নিয়ে এই বিশেষ আয়োজন:
১.স্প্যাকার্টাস ৭১(২০০৭): মুক্তিযুদ্ধ চলছে,পরিবার কে বাঁচাতে গৃহকর্তা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানকে মন যুগিয়ে চলেন,পাকিস্তানের পতাকা লাগান। কিন্তু এইগুলো মেনে নেয় না,তাঁর দুটি যমজ সন্তান শাওন ও বাঁধন। শাওনের বিয়ে ঠিক, একদিন মুক্তিযুদ্ধে চলে যায়, এই কথা জেনে যায় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান। নেমে আসে পুরো পরিবারে দুর্যোগ,আরো বহু ঘটনা পেরিয়ে নাটকটি শেষ হয় করুন পরিণতিতে। আনিসুল হকের রচনায় এই নাটকে অভিনয় করেন শাহির হুদা রুমী, মনিরা মিঠু, নাফিজা, শাওন,বাঁধন,সোহেল খান সহ অন্যান্য। এটি নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে বিবেচিত।
২.করিমন বেওয়া(২০০১): মুক্তিযুদ্ধের অনেক বছর পেরিয়ে গেছে,গ্রামে দু:খ কষ্টে বেঁচে আছেন বীরাঙ্গনা করিমন বেওয়া, গ্রামের মাতবরের নজর তাঁর ভিটা-জমির দিকে। একদিন ঢাকা থেকে একদল আসে,তাকে বিশেষ সম্মাননা দেবার জন্য। ঢাকায় যায় করিমন, কিন্তু তাদের ধারণা হয় তাঁরা ভুল করিমন কে আনা হয়েছে, ফিরিয়ে দেয়া হয় তাকে।য খন তাঁরা সঠিক জানতে পারে, আবার যান করিমনের কাছে, কিন্তু তিনি আর আসেন না। আনিসুল হকের লিখা ‘একজন বীরাঙ্গনার খোঁজে’ অবলম্বনে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী নির্মাণ করেন একুশে টিভির জন্য। নাম ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করেন প্রয়াত অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ার।
৩.ঊন- মানুষ(২০০৫): এই পৃথিবীতে বামন সম্প্রদায় স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে পরিচিত নন, তাদের নানা বিপত্তি পেরিয়ে সফল হতে হয়, এই নিয়েই হুমায়ূন সাধুর গল্প অবলম্বনে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী নির্মাণ করেন ‘ঊন- মানুষ’। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন হুমায়ূন সাধু ,আরো অভিনয় করেন তিশা, মারজুক রাসেল, আশফাক নিপুণ।
৪.ক্যারাম(২০০৪): টিভি নাটকে মোশাররফ করিমের জনপ্রিয়তার পেছনে যে নাটকটির অনেকখানি অবদান, সেটির নাম ‘ক্যারাম’। শফিক নামের একজন ছেলে,সে প্রায় সবকিছুতেই পারদর্শী, কিন্তু আঙুলের কাজে সেভাবে পেরে উঠে না। শফিক চরিত্রে অভিনয় করে মোশাররফ করিম অভিনয় করে নজর কাড়েন,তাঁর প্রেমিকার চরিত্রে অভিনয় করেন তিশা।আনিসুল হকের কাহিনী নিয়ে নির্মিত এই নাটকটি ফারুকীর সবচেয়ে জনপ্রিয় নাটক হিসেবে পরিচিত। পরবর্তীতে এটির সিক্যুয়েলও বের হয়।
৬.প্রতি চুনিয়া(২০০১): দুই অসম বয়সীর পত্রমিতালীর মাধ্যমের প্রেমের গল্প নিয়ে নাটক ‘প্রতি চুনিয়া’। আনিসুল হকের রচনায় মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী এই নাটকে অভিনয় শিল্পী হিসেবে বেছে নেন বিপাশা হায়াত ও কৃষেন্দু চট্টোপাধ্যায় কে।এটি অন্যতম সেরা রোমান্টিক নাটক হিসেবে সুপরিচিত।
৭.চড়ুইভাতি(২০০৩): বুয়েটে পড়া ফয়সাল, আকৃষ্ট হয় তাঁরই ক্যাম্পাসের এক ম্যাডামের, পাশাপাশি ফয়সাল কে ভালোবাসে তাঁর বান্ধবী সাথী, সাথে উঠে আসে বন্ধুত্বপূর্ণ আরো আনুষঙ্গিক ঘটনা প্রবাহ। আনিসুল হকের রচনায় ফারুকীর নির্দেশনায় এই নাটকে অনেকদিন পর অভিনয়ে ফিরে আসেন ইলোরা গওহর, এছাড়া ছিলেন মামুনুল হক,অপি করিম, মারজুক রাসেল। ইলোরা গওহর এই নাটকের জন্য মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পান। এই নাটকেরই সিক্যুয়েল হচ্ছে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘ব্যাচেলর’।
৮.বালক- বালিকা(২০০৪): বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণ তরুণীর ভালোবাসার গল্প নিয়ে ফারুকী নির্মাণ করেন ‘বালক- বালিকা’। আনিসুল হক রচিত এই নাটক্ অভিনয় করেন মাহফুজ আহমেদ ও অপি করিম। দর্শকমহলে এটি বেশ জনপ্রিয় নাটক।
৯.মা- য়া(২০০৯): মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নির্দেশনায় সর্বশেষ নাটক ‘মা-য়া’। স্ত্রীর কালো সন্তান নিয়ে বেশ সন্দেহবাতিক স্বামী, উনি ভেবেই পান নাকেন এইরকম সন্তান হলো। স্বামী সহ্য করতে না পারলেও, মাতৃরুপে স্ত্রী তাকে আগলে রাখেন।স্বামী খোঁজ লাগান, বেরিয়ে আসে অন্য কাহিনী। আনিসুল হকের রচনায় এই নাটকে অভিনয় করেছিলেন ফিমা, গাউসুল ইসলাম শাওন, শ্রাবন্তী সহ প্রমুখ।
১০.ফার্স্ট লাভ ডেট(২০০৯): বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদেরদের মাঝে ভালোবাসার সংজ্ঞা,তাদের অনুভূতি নিয়ে সাজানো নাটক ‘ফার্স্ট লাভ ডেট’। এখনকার যুগলদের মাঝে ‘ডেট’ শব্দটা বেশ আকর্ষনীয়, তাঁরই প্রতিফলন রুপ এসেছে এই নাটকে,গল্পের শেষে উঠে আসে শিক্ষনীয় দিক। আনিসুল হকের রচনায় ফারুকীর ভালোবাসা দিবসের নাটকে অভিনয় করেছিল মুসাফির সৈয়দ, আশফাক নিপুণ, আলিশা সহ প্রমুখ।