খেলাহোমপেজ স্লাইড ছবি
যেখানে বাংলাদেশ অদ্বিতীয়

মঞ্জুর দেওয়ান: আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলে ১৯৮৬ সালে। ৩১ মার্চ একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচটি ছিলো পাকিস্তানের বিপক্ষে। ঐতিহাসিক সে ম্যাচে জয় পাওয়া তো দূরে থাক; এরপর থেকে টানা এক যুগ ওয়ানডে ক্রিকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ থেকে হারতে থাকা দলটি জয়ের দেখা পেয়েছিলো এক যুগ পর। ১৯৯৮ সালে প্রথম জয় পাওয়া ম্যাচটি ছিলো কেনিয়ার বিপক্ষে। টেস্ট ক্রিকেটেও হারের রিপিটিশন! ২০০০ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হবার পর হারের বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে বাংলাদেশ। টানা ৩৪ টেস্ট কোন জয়ের দেখা পায়নি টাইগাররা। পাঁচবছর পর নিজেদের ৩৫তম টেস্টে জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ।
এতো এতো হারের পরও থেমে থাকেনি বাংলার ক্রিকেট। হাটি হাটি পা পা করে এগিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের সক্ষমতার উদাহরণ তুলে ধরেছে বহুবার। সুযোগ পেলে বাংলাদেশ কি করতে পারে তা টের পেয়েছে অনেক নামজাদা দল। তিন দশকের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশ বহু চমক জাগানিয়া ঘটনার জন্ম দিয়েছে। নিজেদের দিনে রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়েছে বাংলার দামাল ছেলেরা। বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের এমন কয়েকটি দলীয় ও ব্যক্তিগত রেকর্ডের কথা থাকছে এই আয়োজনে।
সবচেয়ে বেশি সময় শীর্ষ অলরাউন্ডার
বাংলাদেশ ক্রিকেটের নাম নিলেই হয়তো সবার আগে নাম আসবে সাকিব আল হাসান। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা যে সাকিব তা নিয়ে কারোও সন্দেহ থাকার কথা না। আইসিসির র্যাংকিংয়ে সবচেয়ে বেশি সময় এক নম্বরে থাকার রেকর্ড গড়েছেন অনেকদিন আগেই। এখন পর্যন্ত সাকিবই একমাত্র অলরাউন্ডার যিনি ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই একসঙ্গে এক নম্বর র্যাংকিংয়ে ছিলেন। একবার দুইবার নয়, সাকিব তিনবার আইসিসির র্যাংকিংয়ে শীর্ষ অবস্থানে ছিলেন। এই বিরল কীর্তি পৃথিবীর আর কোন ক্রিকেটারের নেই। সবচেয়ে বেশি সময় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছিলেন ওয়ানডে ক্রিকেটে। ৩২৪ সপ্তাহের বেশি সময় ওয়ানডের শীর্ষ অলরাউন্ডার ছিলেন সাকিব। যেখানে সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস ছিলেন ২০৩ সপ্তাহ। আর ১৩৮ সপ্তাহ নিয়ে তার পিছনে আছে আরেক দক্ষিণ আফ্রিকান গ্রেট শন পলক। টেস্ট ক্রিকেটেও বিশ্বরেকর্ড রয়েছে সাকিবের। দেড়শো সপ্তাহের বেশি শীর্ষ অলরাউন্ডার ছিলেন। দুইয়ে থাকা ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিন সাকিবের পঞ্চাশ সপ্তাহ কম শীর্ষে থেকেছেন। একই বিভাগে সবচেয়ে বেশি সময় শীর্ষ স্থান ধরে রাখার বেলায়ও সাকিব সবার উপরে।
অভিষেকে দশ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি
অভিষেকে দশ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করার বিরল রেকর্ড রয়েছে আবুল হাসান রাজুর। টেস্ট ক্রিকেটের সুদীর্ঘ ১৪২ বছরের ইতিহাসে এমন কীর্তি রয়েছে আর একজনের। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দশে নেমে অস্ট্রেলিয়ার রেগি ডাফের ভাগ বসিয়েছিলেন রাজু। অভিষেকে রাজুর অনবদ্য ব্যাটিং ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। ১৯০২ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের রেকর্ড ভেঙ্গেছিলো খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে। ১২৩ বলে ১৪ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় সাজানো ছিলো রাজুর ১১৩ রানের ঝলমলে ইনিংস।
এক ইনিংসে হ্যাট্রিক সহ সেঞ্চুরি
এই রেকর্ডটিতে আর কারোও ভাগ নেই! এককভাবে রেকর্ডের মালিক সোহাগ গাজী। টেস্ট ক্রিকেটে হ্যাট্রিক সহ পাঁচ উইকেট তুলে নেয়া ও সেঞ্চুরির রেকর্ড পৃথিবীর আর কোন খেলোয়াড়ের নেই। ক্রিকেট বিধাতা একদিনে যা দেওয়া সম্ভব সোহাগ গাজীকে সেদিন দিয়েছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটের রেকর্ড বইয়ে স্বর্ণাক্ষরে নাম লিখিয়েছিলেন। আর বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছিলেন গর্ব করার এক দূর্লভ উপলক্ষ্য!
উইকেট কিপার হয়ে জোড়া ডাবল সেঞ্চুরি
টেস্ট ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত উইকেট কিপারদের ডাবল সেঞ্চুরি সংখ্যা নয়টি। যার মধ্যে মুশফিকুর রহিমের দুটি! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। মুশফিকের জোড়া ডাবল সেঞ্চুরি। উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে যা বিশ্বরেকর্ড। উইকেট রক্ষক হিসেবে শেষ দুটি সেঞ্চুরিও মুশফিকের। ২০১৩ সালে গল টেস্টে জোড়া শতকের পর ২০১৮ তে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২১৯ রানের চোখ জুড়ানো এক ইনিংস খেলেন। আর তাতেই রেকর্ড বইয়ে নাম উঠে যায় মুশফিকুর রহিমের।