জাতীয়
রাতভর ইবাদত বন্দেগীতে পবিত্র শবে বরাত পালিত

ঢাকা: ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পালিত হয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের সৌভাগ্যের রজনী পবিত্র শবে বরাত।
মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্বের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও বিশেষ মোনাজাত ও দোয়াখায়েরে শামিল ছিলেন সারারাত।
ফারসি ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত এবং ‘বরাত’ শব্দের অর্থ সৌভাগ্য। আরবিতে বলে ‘লাইলাতুল বরাত’, অর্থাৎ সৌভাগ্যের রজনী। হিজরি সালের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি মুসলিম উম্মাহ পালন করে সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে। রোববার দিবাগত রাত ছিল পবিত্র শবে বরাত।
মর্যাদাপূর্ণ এই রাতে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জন্য তার অশেষ রহমতের দরজা খুলে দেন। মুক্তি ও ভাগ্য নির্ধারণের পূণ্যময় রাত শবে বরাত না ঘুমিয়ে নেক আমলে মধ্য দিয়ে কাটালেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। মহিমান্বিত এই রাতে সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময়ের অনুগ্রহ লাভের আশায় বেশি বেশি নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, জিকিরে মগ্ন ছিলেন। অনেকে রোজা রেখেছেন। দান-খয়রাত করছেন। বিগত জীবনের পাপ মার্জনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেছেন।
পবিত্র শবে বরাত পালনের জন্য বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কর্মসূচি গ্রহণ করে। ইসলামী ফাউন্ডেশন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে গতকাল বাদ মাগরিব থেকে রাতব্যাপী কর্মসূচির আয়োজন করে। এর মধ্যে ছিল ‘শবে বরাতের ফজিলত’, ‘ইবাদত ও দোয়ার গুরুত্ব’, ‘শবে বরাত ও রমজানের তাৎপর্য’, ‘জিকিরের ফজিলত ও গুরুত্ব’ এবং ‘তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত’ বিষয়ে আলোচনা। ছিল পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, হামদ-নাত, মিলাদ ও বিশেষ মোনাজাত।
সৌভাগ্যের এ রজনীতে সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলসহ নানা এবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে রাতটি অতিবাহিত করেছেন। একই সাথে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহিমান্বিত এ রাতটি ইবাদত বন্দেগীর মাঝে কাটিয়েছেন।এ উপলক্ষে ধর্মপ্রাণ নারী-পুরুষরা নফল রোজাও পালন করছেন।
এ রাত উপলক্ষে বাসাবাড়ি ছাড়াও মসজিদে মসজিদে রাতভর হয়েছে নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, ওয়াজ মাহফিল, অন্যান্য এবাদত-বন্দেগি ও মোনাজাত। রাতব্যাপী এবাদত, বন্দেগি, জিকির ছাড়াও পবিত্র এ রাতে মুসলমানরা মৃত বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজনসহ প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করেন। তাই এ রাতে কবরস্থানগুলোতে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও এ উপলক্ষে ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেছে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।
এছাড়া পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে আজ বুধবার শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন বার্তা/কেকে