জাতীয়
শুভ জন্মদিন নাগরিক কবি

“তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,
তোমাকে পাওয়ার জন্যে
আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?
আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন?”
এভাবেই স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা বর্ণনা করেছেন আমাদের সকলের প্রিয় নাগরিক কবি, বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমান। যিনি শব্দ দিয়ে দৃশ্য তৈরি করতেন। সেই দৃশ্যবলী বলতো বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা, অবিচারের কথা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক সরব প্রতিবাদ থাকতো তার শব্দে শব্দে। তিনি ছিলেন কখনো বিপ্লবী, কখনো প্রেমিক, কখনো বিদ্রোহী।
“জাতিসংঘে অবিরল তুষার ঝরলে
পৃথিবীতে বসন্তের ফুল
চাপা পড়বে না।
বাংলাদেশ ভূমিহীন চাষীর সংসার
ছারখার হলেও নিশ্চিত
জাতিসংঘে প্রার্থনা ঘরে নিমগ্নতা
থাকবে অটুট।
কে সুন্দরী ডলারের শূন্য মালা গাঁথে
স্বপ্নের গহনে?”
তিনি কবিতায় শোষিত মানুষের কথা বলতেন, তিনি শোষণহীন, বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতেন। পৃথিবী হবে কবিতার মত সত্য সুন্দর!
” কী পরীক্ষা নেবে তুমি আর বারবার?
হাতে জপমালা নেই, তবু
আমি তো তোমার নাম মন্ত্রের মতন
করি উচ্চারণ সর্বক্ষণ। যেখানে তোমার ছায়া
স্বপ্নিল বিলাসে
অপূর্ব লুটিয়ে পড়ে, সেখানে আমার ওষ্ঠ রেখে
অনেক আলোকবর্ষ যাপন করতে পারি, তোমারই উদ্দেশে
সাঁতার না জেনেও নিঃশঙ্ক দ্বিধাহীন
গহন নদীতে নেমে যেতে পারি।
তোমার সন্ধানে ক্রোশ দাউ দাউ পথ হেঁটে
অগ্নিশুদ্ধ হতে পারি, পারি
বুকের শোণিতে ফুল ফোটাতে পাষাণে।”
তিনি ছিলেন মৌলিক প্রেমিক। আজ ২৩ অক্টোবর এই প্রেমিক এবং বিপ্লবী কবির জন্মদিন। ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার মাহুতটুলীতে কবি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে কবি, সাংবাদিক, গীতিকার ও কলামিস্ট ছিলেন। আর দীর্ঘ ছয় দশক কবি এসব ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাবলীল ধারায় লেখালেখি করে বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তার দুটি কবিতা খুবই জনপ্রিয়তা পায়। তিনি ‘মজলুম আদিব’ ছদ্মনামেও লিখতেন। এই নাগরিক কবির জন্মদিনে নতুন বার্তার শুভেচ্ছা।