টেক টকট্রেন্ডিং খবরপ্রযুক্তিহোমপেজ স্লাইড ছবি
এক নজরে মে মাসের গুগল কী-নোট

আব্দুল্লাহ আল মুনতাসির: প্রতি বছরের মতো ২০১৯ এর গুগল কী-নোটে, গুগল তার আসন্ন চমকগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। গত ৭ মে সফটওয়্যার বেহিমথ গুগল শোরলাইন ক্যালিফোর্নিয়া তে হোস্ট করে তাদের কী-নোট যেখানে গুগলের সি.ই.ও. সুন্দার পিচাই অনুষ্ঠানের শুরু করেন এবং সবাইকে অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এবছর এই কী-নোটে কি কি উল্লেখযোগ্য প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে এসেছে গুগল।
১। অগমেন্টেড রিয়ালিটি – গুগলের সবচেয়ে বেশি পরিচিত সার্ভিস তাদের সার্চ ইঞ্জিন। কোন কিছু সার্চ করার নামই এখন বদলে গিয়েছে তাদের সার্ভিসের কারনে। এখন আমরা বলি গুগল করা। এই সার্চ ইঞ্জিনে অগমেন্টেড রিয়ালিটি যোগ করার ব্যবস্থা নিয়ে এসেছে গুগল। এখন কোন কিছু সার্চ করে শুধু ছবিই না বরং ৩ডি মডেল দেখতে পাবেন আপনার ফোনে। এবং শুধু দেখা পর্যন্তই না, তা আবার আপনার আসে পাশে অগমেন্টেড রিয়ালিটির মাধ্যমে দেখতে পাবেন। উদাহরণ সরূপ গুগল, মাংসপেশি নিয়ে সার্চ করে তার ৩ডি মডেল সবার সামনে তুলে ধরে। এ থেকে শিক্ষা ক্ষেত্রে এক নতুন দুয়ার খুলে যাবে বলে মনে করা যায়।
২। গুগল লেন্স – গুগল লেন্স তাদের একটি পুরনো সার্ভিস। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর উপর নির্ভরশীল গুগল লেন্স এর সহায়তায় আপনি এমন অনেক কিছু সার্চ করতে পারবেন যা বলে বোঝানোর মতো অবস্থা হয়তো থাকেনা অনেক সময়। যেমন ধরুন, নতুন কোন রেস্টুরেন্টে গিয়েছেন। তাদের মেনু তে আপনার ফোনের গুগল লেন্স এর সহায়তায় দেখে নিতে পারেন কোন খাবারটি সবচেয়ে বিখ্যাত। লেন্স চিহ্নিত করে দিবে আপনাকে তাদের সেসব খাবার। শুধু তাই না অন্যান্য খাবারের অপর ট্যাপ করলেও দেখতে পাবেন সেসব খাবারের অন্যান্যদের আপলোড করা গুগল ম্যাপ এর মাধ্যমে। তবে দুঃখের বিষয় এই সার্ভিসটি শুধু মাত্র গুগল গো ইউজারদের জন্য রাখা হয়েছে আপাতত যা আমাদের দেশে নেই। এছাড়াও পরবর্তীতে লাইভ ট্র্যান্সলেশনের মতো সুবিধাও যোগ করার কথা বলা হয়েছে যেন সুবিধাবঞ্চিত নিরক্ষরও এর ব্যবহার করে বুঝতে পারে কি লিখা আছে কোন জায়গায়।
৩। অ্যান্ড্রয়েড কিউ – অ্যান্ড্রয়েড কিউ এর বেটা ভার্সন ২১ টি ভিন্ন ভিন্ন অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে গুগল। যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে প্রাইভেসিকে। হালের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলও প্রাইভেসি। কোন কিছুতেই এখন আর প্রাইভেসির ভরসা পাওয়া যায়না। তবে গুগল বলে তারা মানুষের প্রাইভেসির কথা বিবেচনা করে। তাই আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সেটিংস এ প্রাইভেসি খুব সহজেই চেক করে নিতে পারবেন। কোন কোন অ্যাপ কি কি ইনফরমেশন নিচ্ছে, চালু বা বন্ধ করা সহ সবকিছু আপনার কন্ট্রোলে থাকবে এখন। এমনকি গুগল ম্যাপ এও ইনকগনিটো মোড যোগ করার ব্যবস্থা রাখা হবে বলে জানিয়েছে গুগল। যেন আপনি কোথায় যাচ্ছেন, কোন জায়গা সার্চ করছেন তার রেকর্ড রাখা হচ্ছে নাকি না তা আপনি কন্ট্রোল করতে পারেন। অ্যান্ড্রয়েড কিউ এর আরেক বড় ফিচার হল তা ফাইভ জি সাপোর্ট করবে।
৪। ডুপ্লেক্স অন্য ওয়েব – ইউ এস এবং ইউ কে ভিত্তিক এই সার্ভিসটি আপনার গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টকে করবে আরও শক্তিশালী। ক্যালেন্ডার থেকে রিমাইন্ডারের তথ্য সংগ্রহ করে আপনাকে তো আগে জানানো হতোই যে কখন আপনার কি করার কথা বা যাওয়ার কথা, কিন্তু এখন আপনাকে এই সার্ভিস ট্যাক্সি পর্যন্তও ডেকে দিতে বা হোটেল এ বুকিং দিতে সক্ষম হবে বলে জানানো হয়। এবং আপনাকে সময় বা দিন উল্লেখ ও করতে হবেনা, রিমাইন্ডার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নিবে।
৫। পিক্সেল ৩এ এবং পিক্সেল ৩এ এক্সএল – গুগল কী-নোটের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল এই দুটি ফোনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। মূলত বাজেট ফ্রেন্ডলি হিসেবে বানানো এই ফোন দুটি যথাক্রমে ৩৯৯ মার্কিন ডলার ও ৪৭৯ মার্কিন ডলারে পাওয়া যাবে। ফ্ল্যাগশিপ না হলেও ফ্ল্যাগশিপের অনেক ফিচারই থাকছে ফোন দুটিতে। যেমন বাজারের সবচেয়ে শক্তিশালী মোবাইল ক্যামেরা হিসেবে বিখ্যাত পিক্সেল ৩ ক্যামেরা। এই ক্যামেরার মতোই পারফরমান্স দিবে বাজেট ফ্রেন্ডলি ফোনেও। সফটওয়্যার ফিচারও প্রায় ফ্ল্যাগশিপ লেভেল এই থাকছে। শুধু মেটাল ও গ্লাস বডির জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে প্লাস্টিক। কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬৭০ পুরানো একটি প্রসেসর হলেও গুগল ভাল ভাবেই অপটিমাইজ করে নিয়েছে বিধায় পারফরমান্সে তেমন ঝামেলা পাবেন না। তাদের জি-ওলেড নামক নতুন ধরনের ডিসপ্লে তে অসাধারণ ভিউইং এঙ্গেল পাওয়া যাবে। সাথে থাকছে ৫.৬ ইঞ্চি ডিসপ্লে ও ৩০০০ মিলিয়াম্প এর ব্যাটারি ৩এ তে, ৬ ইঞ্চি ডিসপ্লে ও ৩৭০০ মিলিয়াম্প ব্যাটারি ৩এ এক্স এল এ। দুটি ফোনেই থাকছে একই প্রসেসর, একই ১২.২ মেগাপিক্সেল ব্যাক ও ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা।
কোন আইপি সার্টিফিকেশন না থাকায় ওয়াটার প্রুফ না তবে সবার প্রিয় ৩.৫ হেডফোন জ্যাক ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সাথে ফাস্ট চার্জিং তো থাকছেই।