ব্যবসা ও বাণিজ্যহোমপেজ স্লাইড ছবি
এডিডাস যেসব কারণে সফল

ফাহাদ কবির: এডিডাস খেলাধুলার সামগ্রী প্রস্তুতকারী জার্মান প্রতিষ্ঠান। স্পোর্টস সু, খেলোয়াড়দের পোশাক এবং নানা ক্রীড়া সামগ্রী তৈরিতে বিশ্বের প্রথম এবং বৃহত্তম কোম্পানী এখন এডিডাস। কোম্পানীটির পথচলা শুরু হয়েছিল ১৯৪৮ সালে এডলফ ডাসলারের হাত ধরে। বাবা ক্রিস্টোফ ভন উইলহেল্ম ডাসলার জুতা কারখানার শ্রমিক হওয়ার সুবাদে বাবার হাত ধরেই জুতা বানানোর হাতেখড়ি হয় এডলফ ডাসলার এবং রুডলফ ডাসলারের। দুই ভাই মিলে ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নিজেদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান জিবারডার ডাসলার সু ফ্যাব্রিক বা ডাসলার ব্রাদার্স সু ফ্যাক্টরি কিন্তু তারা বেশিদিন এক সাথে থাকতে পারেনি। ডাসলার ভাতৃদ্বয়ের ব্যবসা আলাদা হওয়ার পর রুডলফ ডাসলার তৈরি করে পুমা এবং এডলফ ডাসলার তৈরি করে।

পুমা ও নাইকিকে কিভাবে হারিয়ে নিজেকে সামনের দিকে নিয়ে যাবে সে ভাবনায় বিভোর থাকতেন এডলফ ডাসলার। তাই জুতা বানানোর পাশাপাশি খেলায়ারদের সাথে মিশতেন, বিশ্বের সেরা এ্যাথলেটদের আস্থা অর্জন করেছিলেন এডলফ ডাসলার। এ্যাথলেটদের কাছ থেকে তিনি শুনতেন তাদের কি প্রয়োজন, কোথায় অসুবিধা। এসবের প্রতিফলন থাকতো তার পণ্যে।

এডলফ ডাসলার নিজে সব সময় নতুন কিছু আবিষ্কার করতে চাইতেন তাই ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপে অফিসিয়াল ফুটবল ‘টেলস্টার’ সরবরাহ করে এডিডাস। সাদা-কালো টিভিতে যাতে সহজে চোখে পড়ে সেভাবেই তৈরি হয়েছিল বলগুলো। পরের বিশ্বকাপগুলোতেও বল সরবরাহ করে এডিডাস। ক্রীড়াঙ্গণের অনেকের পায়ে পৌঁছে যায় এডিডাসের থ্রি-স্ট্রাইপ জুতা। আর্জেন্টিনার জাতীয় ফুটবল দলের পায়ে ওঠে এডিডাসের জুতা। এডিডাসের বুট পায়ে পর্বতারোহণ করেন পর্বতারোহী রেইনহোল্ড মেসনার, জিমন্যাস্ট নাদিয়া ফমেনিসি নিখুঁতভাবে ১০ স্কোর করতে থাকেন এডিডাসের জুতা পায়ে। সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতারও মুখোমুখি হয় এডিডাস। নেতৃত্বের অভাব এবং প্রশ্নবিদ্ধ নানা পদক্ষেপের ধারাবাহিকতায় দেউলিয়াত্বের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় এডিডাস। তবে সেখান থেকে ফিরে আসার চমৎকার একটি গল্প আছে এডিডাসের।

রবার্ট লুইস ড্রিফাস প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব নেন তার সাথে সহকারী হিসেবে ছিলেন ক্রিস্চিয়ান ট্যুরেস। তারা বুঝতে পেরেছিলেন এডিডাসের জন্য নতুন করে কিছু উদ্ভাবনের প্রয়োজন নেই। তাদের চোখে এডিডাস ছিল ঘুমিয়ে থাকা দানব। আগে এডিডাস বিক্রয়ের ওপর জোর দিত। কিন্তু এবার জোর দিল বিপণন বা প্রচারের ওপর। অবশ্য এসময়ও যে এডিডাসের উদ্ভাবনী কার্যক্রম থেমে ছিল তা নয়। এ্যাথলেট এবং খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে দিতে নানা পণ্য নিয়ে আসে তারা। নিজেদের অবস্থান একটু মজবুত হওয়ার পর ১৯৯৭ সালে সালোমন গ্রুপ এবং এর ব্র্যান্ড টেইলর মেড, ম্যাভিক, বনফায়ার ইত্যাদি অধিগ্রহণ করে এডিডাস-সালোমন এজি নাম ধারণ করে। ২০০৬ সালে সালোমান গ্রুপ আলাদা হয়ে যায়, এডিডাস এজি নামে কাজ করতে থাকে ডাসলারের এডিডাস। এসময় এডিডাস রিবক এবং এর ব্র্যান্ড রকপোর্ট, রিবক সিসিএম হকি কিনে নেয়। ক্রীড়াসামগ্রী উৎপাদনের ক্ষেত্রে শীর্ষ দু’টি কোম্পানীর একটিতে পরিণত হয় এডিডাস।