চলতি হাওয়াজাতীয়হোমপেজ স্লাইড ছবি
করোনার আগের পৃথিবী কি আদৌ ফিরে আসবে?

মাত্র ৪ মাস আগের যে জানা পৃথিবীটা আমাদের ছিল, অনেকের জন্যই আর কখনোই তাতে ফেরা হবে না! সেই পৃথিবী, যেখানে পরিচিতের দিকে ছুটে যাওয়া যেতো, তাঁদের জড়িয়ে ধরা যেতো, হ্যান্ডশেক তো করা যেতোই। একসাথে হট্টগোল, হৈচৈ করা যেতো, হাসতে হাসতে গায়ের ওপর গড়িয়ে পড়া যেতো। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের নামাজ পড়া যেতো, নামাজ শেষে কোলাকুলি করা যেতো। ঘোরা, বেড়ানো, দাওয়াত – এসব তো আছেই।
যদিও আশা করা যাচ্ছে, আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে সংক্রমণ বিস্তারের লাগাম হয়তো টেনে ধরা যাবে কিন্তু সংক্রমণ পুরোপুরি এলিমিনেট হতে ১৫-২৫ বছরও লেগে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আশঙ্কা আর অনভ্যাসের কারনে অন্তত ২০ বছরের আগে আগের সেই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার খুব একটা কোনো সম্ভবনা আমি অন্তত দেখছি না। কি ঘটতে যাচ্ছে এই কুড়ি বছরে?
১) এখনকার দুনিয়ায় আগের সেই পৃথিবী দেখা যত মানুষ আছেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ১২৫ কোটি জন এই ২০ বছরে “বিভিন্ন ভাবে” মৃত্যুবরন করবেন। মাত্র ৪ মাস আগের সেই দুনিয়াটাতে তাঁদের আর কখনোই ফেরা হবে না। ২) আমার মত যারা মধ্য পঞ্চাশে আছেন, তাঁরা ও তাঁদের জেষ্ঠ্যদের অন্তত ৮০%-ই ২০ বছর পরের পুনর্বার স্বাভাবিক হওয়া দুনিয়াটা দেখার জন্য “বিভিন্ন কারন”-এ আর থাকবেন না। (“বিভিন্ন কারন” বলতে শুধু করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করাটা বুঝাই নাই।
২০ বছর ধরে এঁদের বয়স বাড়া ও সেজন্য বার্ধক্যজনিত সকল পরিস্থিতির কথা বলেছি) ৩) আগামী ১৫-২৫ বছর একধরনের স্থবিরতার মধ্যে যে জেনারেশনটি বেড়ে উঠবে, তাঁদের জন্য আগের দুনিয়ার গতময়তা অনুধাবন করাটা কঠিন হয়ে যাবে। তাই ২০ বছর পরে যে ১০০ কোটি তরুন কর্মী আমরা পাবো, তাঁরা নিজেরা কোনো দোষ না করেও হয়তো আগে দেখা সেরকমের উদ্যমী হবেন না। হবেন, অনেক বেশি রিস্ক এভার্স, সাবধানী!
এতকথা বলার উদ্দেশ্য একটাই, আর তা হলো: যে সম্ভবনাময় পৃথিবীটা আমরা একবার পিছনে ফেলে এসেছি, সেটা আর ফিরে পাওয়া না পাওয়া নিয়ে যেন আমরা হতাশ না হই। বরং এখন যা পাচ্ছি, যতটা পাচ্ছি, সেটারই সর্বোচ্চ ব্যবহার কিভাবে করা যায়, সেই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি যেন নিতে পারি।
- কাজী আহমেদ পারভেজ