বিনোদনহোমপেজ স্লাইড ছবি
ঢাকা মেট্রো কিংবা এক অন্যরকম ঢাকার প্রতিচ্ছবি

মাহমুদুর রহমান: জ্যামের শহর ঢাকা, মানুষের শহর ঢাকা। রাস্তা কাটাকুটি করে জনজীবন বিপর্যস্ত। এ আমাদের রোজকার দেখা ঢাকার চিত্র। কিন্তু এর বাইরে ঢাকার আরেকটা চিত্র আছে। বরং বলা যায় ঢাকার একটা অংশের আলাদা চরিত্র আছে। সেটা কর্পোরেট দুনিয়া। ঝা চকচকা সে দুনিয়ায় সব কেতাদুরস্ত মানুষের বাস। বাইরে একে অপরের সঙ্গে সৌহার্দ্য রেখে ভেতরে তাদের কেবল প্রতিযোগিতা। একে অপরকে টেক্কা দিয়ে উপরে ওঠার যান্ত্রিক সে জীবনে অভ্যস্ত অনেক মানুষ। তাদের মাঝেই কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা সেই ক্লেদ থেকে বেরিয়ে পড়তে চায়। কিন্তু পারে না। যদি কেউ সে কাজটা করে ফেলে তাহলে কেমন হয়?
এরকম একটি গল্প নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘ঢাকা মেট্রো’ নামের ওয়েব সিরিজ। নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী। নিজে কর্পোরেট দুনিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকায় সে দুনিয়াটা ভালো চেনেন অমিতাভ। ঢাকা মেট্রো তৈরির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “১০-১২ বছর আগে এশিয়াটিকের নেভিল ও আমরা একসঙ্গে আড্ডা দিতাম। রাতে খেতাম। তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে মনে হতো, এই যে তার কর্পোরেট জীবন সে ধারণ করছে, যদি এখান থেকে সে কোনো দিন বের হয়ে যায়, তাহলে কী হবে! এই বিরক্তি, হতাশা, জীবনবোধ কীভাবে উঠে আসবে। মূলত, ঢাকা মেট্রো গাড়িটি নিয়ে সে একদিন বাসা থেকে বের হয়ে যায়। চলে যায় ঢাকার বাইরে। তার হতাশা, বিরক্তি, নতুন পরিবেশ অন্যভাবে উঠে আসে”।
গল্পটা মূলত তিনজন মানুষের। একজন কর্পোরেট দুনিয়া যাপন করা একজন মানুষ, যে সে দুনিয়া ছেড়ে ঢাকার বাইরে চলে যায়। সেখানে গিয়ে তার পরিচয় হয় জয়গুণের সঙ্গে, যাকে জবা বলেও অনেকে চেনে। সেই সঙ্গে রয়েছে রহমান নামে আরেকটি চরিত্র। পাশাপাশি আরও অনেক চরিত্র নিয়ে সাজানো ‘ঢাকা মেট্রো’। মজার ব্যপার, ঢাকা থেকে বেরিয়ে যাওয়া একটা মানুষকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া গল্পের নাম ‘ঢাকা মেট্রো’। এ প্রসঙ্গে ‘সঙ্গীত বাংলা’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অমিতাভ রেজা বলেন, “আমরা ঢাকাকে দেখবো কিন্তু ঢাকার বাইরে থেকে দেখবো। ঢাকার ভেতর থেকে ঢাকাকে এক রকম লাগে, বের হয়ে গেলে এমন লাগবে?
এ গল্পটা মূলত তাদের জন্য যারা ঢাকাকে ভালোবাসেন। কিংবা ঢাকায় বসবাস করেন এবং নতুন করে ঢাকাকে দেখতে চান। আমরা এমন একটা গল্প নিয়ে এসেছি যেখানে অনেক কিছু প্রচলিত ধারণার বাইরে। যেমন এমন একজন পতিতা, যে কবিতা পছন্দ করে”। অনান্য অনেক ওয়েব সিরিজের মতোই এ সিরিজটিও তুলনামূলকভাবে প্রাপ্তবয়স্করদের জন্য। অমিতাভ বলেন, “সম্পর্ক, বিচ্ছেদ, স্মৃতি খুঁজে ফেরা, মুক্তি, বন্দিজীবন, আত্মনিয়ন্ত্রণ, অবসাদ, বিভ্রম ও অন্তিমযাত্রা—এই নয়টি বিষয় নিয়ে প্রথাগত ধারণার বাইরে এই ওয়েব সিরিজটি”।
ডার্ক কমেডি এবং থ্রিলারের যুগলবন্দী ওয়েব সিরিজটি সত্যিই ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে। ‘আয়নাবাজি’ দিয়ে দর্শক মাতানো অমিতাভের কাছ থেকে এমন কিছু আশা করাই স্বাভাবিক। ‘ঢাকা মেট্রো’-তে নানা চরিত্রে অভিনয় করছেন অপি করিম, শারমিন জোহা শশী, নেভিল ফেরদৌস হাসান, শরিফুল ইসলাম, মনোয়ার কবিরসহ আরও অনেকে। নয় পর্বের সিরিজটির শুটিং হয়েছে উত্তরবঙ্গের হয়েছে উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও বগুড়া এবং ঢাকায়। সিরিজটি মুক্তি পাবে আগামী ১১ এপ্রিল এবং এটি দেখা যাবে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘হইচই’ অ্যাপে।