বই Talkসাহিত্যহোমপেজ স্লাইড ছবি
গালিবের বোহেমিয়ান জীবন

নাইম বিশ্বাস: গালিব রাতের বেলা ফ্রেঞ্চ ওয়াইন পান করতেন, অন্য বেলায় বিলেত থেকে আসা ওল্ড টম। দেশি মদ গালিব মুখে তুলতে পারতেন না। ম্যাকফারসন সায়েব নামের এক ইংরেজের কাছ থেকে গালিব বাকিতে মদ খেতেন, ১৮৩৭ সালে এই দেনা শোধ করতে না পেরে গালিব জেলে যান। একবার এক লোক গালিবকে বললো যারা মদ খায় আল্লাহ তাদের প্রার্থনা শোনেন না। গালিব তার উত্তরে হেসে জবাব দেন, ভাই যার মদ আছে সে আবার কিসের জন্য প্রার্থনা করবে?
গালিব চৌসর বা শতরঞ্চ খেলতে খুব ভালোবাসতেন। এটি এক প্রকার জুয়াখেলা। একবার রমজান মাসে তিনি শতরঞ্চ খেলছেন, এখন সময় তার এক বন্ধু সেখানে পৌঁছালেন। দেখে বললেন, শুনেছিলাম রমজান মাসে শয়তান বন্দী থাকে। গালিবের উত্তর, ঠিকই শুনেছেন, এটা শয়তানেরই থাকার ঘর। সিপাহী বিদ্রোহের সময় গালিবের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় কর্ণেল ব্রাউনের কাছে। সেখানে কর্ণেল গালিবকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি মুসলমান? গালিবের উত্তর, জ্বী, আধা। মদ খাই, শুয়োর খাই না।
কলকাতায় দু বছর ছিলেন গালিব, এখানে এসে আমের সাথে পরিচয় হয় তার। আম খুব ভালোবেসে ফেলেছিলেন। উর্দুভাষী এক বন্ধু গালিবের আমপ্রীতিকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন ও ফল তো গাধারাও খায় না। গালিব উত্তর দিয়েছিলেন সেজন্যেই ওরা গাধা। আজ গালিবের জন্মদিন। উর্দুভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি মীর্জা আসাদুল্লা খান গালিব।
গালিবকে আমি ভালোবাসি। গালিবকে না চিনলে অপূর্ণ থাকতো নিজেকে চেনা। গালিব লিখেছেন- নহ্ গিলে নগমা হুঁঁ নহ্ পরদেশাজ্ ম্যয় হুঁ অপনী শিকস্ত কী আওয়াজ
সুরের পর্দা নই কিছুতেই, নই তো গীতের সার! আমি শুধুই শব্দ- নিজের ভেঙে যাবার।