আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণচলতি হাওয়াজাতীয়ট্রেন্ডিং খবরহোমপেজ স্লাইড ছবি
গ্রেটা থানবার্গ-পরিবেশ রক্ষায় নিবেদিতপ্রাণ এক কিশোরী

মিজানুর রহমান টিপু: জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে ঝড় তুললেন এক কিশোরী। নিউ ইয়র্কে জলবায়ু সম্মেলনে, গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন রোধে ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে তাঁর প্রজন্মের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলে বিশ্বনেতাদের চমকে দিয়েছেন এই পরিবেশবাদী কিশোরী।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে পুরো পৃথিবী জুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছেন এই কিশোরী পরিবেশবাদী। তার ডাকে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে জড়ো হয়েছেন বিভিন্ন দেশের নানা বয়স ও শ্রেণি-পেশার প্রায় অর্ধকোটি মানুষ।
২০১৮ সাল তীব্র তাপপ্রবাহ ও দাবানলে সুইডেনের অবস্থা যখন ভয়াবহ। তখন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলেই প্রকৃতি এত প্রতিকূল হয়ে উঠছে বলে শনাক্ত করেন এই কিশোরী। পরে সেই কিশোরী ওই বছরের ২০ আগস্ট সিদ্ধান্ত নেন ক্লাসে না গিয়ে ৯ সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত আন্দোলন করবেন তিনি। এই কিশোরীর নাম গ্রেটা থানবার্গ।

২০০৩ সালের ৩ জানুয়ারি সুইডেনের স্টকহোমে জন্ম গ্রেটার। মা ওপেরা শিল্পী মালেনা এর্নমান, বাবা অভিনেতা সভান্তে থানবার্গ। অনেক আগে থেকেই পরিবেশ রক্ষা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন গ্রেটা থানবার্গ। তিনি জানান, ২০১১ সালে তিনি প্রথম জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে পারেন। তখন তার বয়স মাত্র ৮ বছর।
সে দাবি করে সুইডিশ সরকারকে অবিলম্বে প্যারিস চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশে কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। এজন্য তিনি দেশের পার্লামেন্ট ‘রিকসদাগ’র সামনে টানা তিন সপ্তাহ বসে আন্দোলনও করেছেন। গ্রেটার এসব কাজ অনুপ্রাণিত করেছে স্কুলের ছোট ছোট শিশু থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন বয়সের মানুষকে।

তার এই চেষ্টার জন্য চলতি বছরের শুরুতে গ্রেটাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্যও মনোনীত করা হয়েছিল। বিভিন্ন সম্মাননা এবং পরিবেশ বিষয়ক স্কলারশিপ পেয়েছেন গ্রেটা থানবার্গ।
তবে একাধিক পুরস্কার তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন, কারণ সেগুলো পেতে হলে তার আকাশপথে সফর করা বাধ্যতামূলক ছিল। এ ছাড়া টাইম ম্যাগাজিন তাকে ২০১৮ সালের সবচেয়ে প্রভাবশালী ২৫ কিশোর-কিশোরীর তালিকায় স্থান দিয়েছে।
অল্প বয়সে জলবায়ু আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার কারণে এবারের জাতিসংঘ জলবায়ু বিষয়ক ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিট, ২০১৯’-এ বক্তব্য রাখতে আমন্ত্রণ জানানো হয় গ্রেটাকে। কিশোরী গ্রেটা সম্মেলনে অংশ নিতে রাজিও হন। কিন্তু তার শর্ত ছিল, উড়োজাহাজে আসবেন না তিনি। আসবেন এমন কোনো যানে, যেখানে কার্বন নিঃসরণ হবে শূন্যের কাছাকাছি। পরে ১৫ দিন ধরে আটলান্টিক মহাসাগরে প্রায় ৩ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রে জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেন গ্রেটা থানবার্গ।