ছুটিহোমপেজ স্লাইড ছবি
ঘুরে আসুন প্রাচীন সভ্যতা থেকে!

মিজানুর রহমান টিপু: আপনি ঘুরতে ভালোবাসেন আর আপনার রয়েছে প্রাচীন ঐতিহ্য ও প্রত্নতত্তের প্রতি আগ্রহ। তাহলে আপনার জন্য রয়েছে এক ঢিলে দুই পাখি মারার সুযোগ। ঢাকার খুব কাছেই রয়েছে প্রাচীন সভ্যতার সাক্ষী উয়ারী-বটেশ্বর। নামটি শুনেই আপনার চোখের সামনে ভেসে আসছে প্রত্নতাত্ত্বিক ও প্রাগৈতিহাসিক নিদর্শনের বিভিন্ন সভ্যতার সাক্ষ্য উয়ারী-বটেশ্বরের রৌপ্যমুদ্রা প্রাপ্তির স্থান, পাথরের গুটিকা, কাঁচের গুটিকা, রৌপ্যমুদ্রা, টিনমিশ্রিত ব্রোঞ্জ নির্মিত কিছু পাত্র। ধাতুর তৈরি অস্ত্রগুলো দেখতে দেখতে কখন যে আপনি হারিয়ে যাবেন আড়াই হাজার বছরের আগের প্রত্ন নিদর্শন একটি জনপদের ভেতর যা আপনি নিজেই টের পাবেন না !

ঢাকার খুব কাছেই নরসিংদী জেলাতে প্রাচীন ঐতিহ্য ও প্রত্নস্থান ওয়ারী-বটেশ্বর। ওয়ারী বটেশ্বর বাংলাদেশের একটি প্রাচীন জনপদ। পুরানো ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় এটি অবস্থিত। ওয়ারী বটেশ্বর সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত একটি প্রত্নস্থান। কৃষিজমি, বাগবাগিচা ও ঘরবাড়ির নিচে চাপা পড়ে আছে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন এক নগর। ওয়ারী-বটেশ্বর থেকে প্রাগৈতিহাসিক যুগের পাথর ও প্রস্তরীভূত জীবাশ্মা কাঠের হাতিয়ার, তাম্রবসতি আবিস্কৃত হয়েছে। ওয়ারী-বটেশ্বর ছিল বাংলাদেশের প্রাচীনতম মহাজনপদ। দুর্গনগরটি ছিল সেই মহাজনপদের রাজধানী। ইতোমধ্যে এখান থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে মাটির দুর্গপ্রাচীর, পরিখা, পাকা রাস্তা,পার্শ্বরাস্তাসহ ইটনির্মিত অনন্য স্থাপত্যনিদর্শন।

পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় অবস্থিত ওয়ারী বটেশ্বর ছিল একটি নদীবন্দর ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র। ওয়ারী বটেশ্বর বিকশিত হয়েছে স্বল্প মূল্যবান পাথরের নয়নাভিরাম পুঁথি তৈরির কারখানার জন্য। ১৯৩৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ওয়ারী গ্রাম খননের সময় শ্রমিকেরা একটি মৃর্যা পাত্রে সঞ্চিত কিছু রৌপ্যমুদ্রা পান। তারা এর বেশিরভাগ স্থানীয় বেনেদের কাছে বিক্রি করে দেন। ওয়ারী বটেশ্বরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহের শুরু এভাবেই। তারপর এখানে আবিষ্কৃত হয়েছে উপমহাদেশের প্রাচীনতম ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা ও মুদ্রাভাণ্ডার, অনন্য স্থাপত্যকীর্তি, হরেক রকমের পুঁথি, সুদর্শন লকেট ওমন্ত্রপূতকবচ,বাটখারা, পোড়ামাটি ও ধাতব শিল্পবস্তু, মৃর্যাকপাত্র, চিত্রশিল্প ইত্যাদি।
কিভাবে যাবেন?
সায়েদাবাদ কিংবা মহাখালী থেকে সরাসরি যেতে পারবেন নরসিংদীর বেলাবোতে। সায়েদাবাদ থেকে মনোহরদী পরিবহনে মরজাল বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে। ভাড়া ১০০ টাকা। সেখান থেকে হেঁটে বা রিকশায় উয়ারী-বটেশ্বর। মহাখালী থেকেও যেতে পারেন বাদশা কিংবা চলন বিল পরিবহনে। ভাড়া একই।