বিনোদনহোমপেজ স্লাইড ছবি
জয়া আহসানের জয়গান

সাবা তারান্নুম: অভিনেত্রী জয়া আহসান। নাম শোনা মাত্রই হাস্যজ্জ্বল যৌবনদীপ্ত অসাধারণ সৌন্দর্য্যের অধিকারী এক অভিনেত্রীর ছায়া ভেসে ওঠে বাঙালী দর্শকের মনে। আমাদের দেশের মেয়ে জয়া আজ তার অভিনয় শৈলীর গুণে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে টালিগঞ্জপাড়া। ঝুলিতে ভরে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক সব সম্মাননা ও পুরষ্কার। বাংলাদেশ আর কলকাতার সমালোচক আর হোমড়াচোমড়া পরিচালকদের প্রিয় নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম জয়া। আর সেই সাথে অর্জন করেছে নিয়েছে কোটি দর্শকের ভালোবাসা চিরতরুণী এই অভিনেত্রী।
মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ব্যাচেলর’ সিনেমার মাধ্যমে জয়ার সিনেমায় পদার্পন। গুরুত্বপূর্ণ কোনো চরিত্রে না দেখা গেলেও ততদিনে টিভি পর্দার পরিচিত মুখ জয়া আহসান। “শঙ্খবাস”, “লাবণ্যপ্রভা”, ”চৈতা পাগল”, “তারপরও আঙুরলতা নন্দকে ভালোবাসে’’ এইসব ধারাবাহিকে জয়ার অভিনয়শৈলী দর্শক মনকে ছুঁয়ে গেছে। সেই সাথে করেছেন এক ঘন্টার নাটকও। নাটক কিংবা সিনেমা সব সময়ই বেছে করা অভ্যাস তার। বাণিজ্যিক সিনেমার মেকাপ কস্টিউম নিয়ে তার ব্যস্ত থাকার চর্চা কোনোকালেই ছিলনা। বরং এক কস্টিউমে যদি পুরো সিনেমা করে ফেলা যেত তবে তাই হয়ত তার জন্য আনন্দের বিষয় হতো বলেছেন জয়া আহসান। অভিনয়ের প্রতি এতোটা একাগ্রতায় বারবারই দর্শককে মুগ্ধ হতে বাধ্য করেছে।
সিনেমার জগতে জয়ার প্রথম মাইলফলক নাসিরউদ্দিন ইউসুফ পরিচালিত “গেরিলা”। সৈয়দ শামসুল হক রচিত “নিষিদ্ধ লোবান” থেকে নির্মিত বিলকিস বানুর চরিত্রের সাবলীল এবং দৃষ্টিনন্দন অভিনয় জয়ার প্রাপ্তির ঝুলিতে এনে দেয় প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র সেরা অভিনেত্রীর পুরষ্কার। এরপর “ডুবসাঁতার” আর “ফিরে এসো বেহুলা”র মতন ভিন্নধারার চলচ্চিত্রে দেখা গেছে জয়াকে। রেদওয়ান রনি পরিচালিত থ্রিলার ধর্মী সিনেমায়ও তার অভিনয় যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছে।
এপারের জয়া আহসান ওপার বাংলায় গিয়ে তাক লাগালেন দর্শক এবং সিনেমার কলাকৌশলীদেরও। ২০১৩ সালে কলকাতার বিখ্যাত পরিচালক অরিন্দম শীল –এর “আবর্ত” সিনেমার মাধ্যমে ওপারে জয়ার পদচারনা শুরু। এরপর সৃজিতের “রাজকাহিনী” যা ছিল “বেগমজান”এর রিমেক। বেগমজান-এ অভিনয় করেছিলেন বলিউডের শীর্ষ নায়িকা বিদ্যা বালান। যিনি কিনা জয়ার অভিনয়ের প্রশংসা করতে কার্পন্য করেননি। শুধু তাই নয় ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়া ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা “ভালোবসার শহর” দেখে বিদ্যা বালান গণমাধ্যমকে বলেন, এমন বলিষ্ঠ অভিনয় তিনি খুব কমই দেখেছেন।
দেশ বিদেশ দাপিয়ে সুনাম আর সম্মাননা কুড়ানো এই মেয়ে দেশে ফিরে উপহার দিয়েছেন আরো একটি অসাধারণ সিনেমা “দেবী”। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হূমায়ুন আহমেদ রচিত এবং অনম বিশ্বাস পরিচালিত এই সিনেমায় রানু চরিত্রে অভিনয় করেন জয়া। চঞ্চল চৌধুরী, শবনম ফারিয়া, ইরেশ যাকের, অনিমেষ আইচ প্রমুখ ছিলেন এই সিনেমায়। দেশ বিদেশে সুনাম কুড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ১৬টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এই সিনেমা।
২৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাঙালী দর্শকের মন জয় করা জয়া তার অভিনয় এবং মডেলিং প্রতিভায় যে সুরুচির পরিচয় দিয়েছেন তা এখনকার সিংহভাগ শিল্পীর মাঝেই বিরল। সাহসী এই শিল্পী বরাবরই নিজের গন্ডি পেরিয়ে চেষ্টা করেছেন দর্শকদের নতুন আর উপভোগ্য কাজ উপহার দেয়ার। তাই রূপে গুণে অনন্যা এই শিল্পীর মন্ত্রমুগ্ধ অভিনয় আর চিরতরুণী সৌন্দর্য্য দ্রবীভূত করে চলছে অসংখ্য দর্শকের মন। আজ এই চির সবুজ অভিনেত্রীর জন্মদিন। শুভ জন্মদিন জয়া আহসান।