জাতীয়হোমপেজ স্লাইড ছবি
এক নবদম্পতির অন্যরকম হানিমুন

আরিফুল আলম জুয়েল: ফেসবুক বিয়ের খবরে সয়লাব! কেউ বাইক নিয়ে নিজের বিয়ের হলুদে দলবল নিয়ে হাজির, তো কেউই বা বন্যার পানির একদম ভিতরের জলকেলির বিয়েতে উপস্থিত! আর চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা! এবার আমি যে বিয়ের কথা বলবো, সেটি এ মাসেরই ঘটনা! গেল ৩ আগস্ট বিয়ে হয় ২৮ বছর বয়সী তারেক ও ২০ বছর বয়সী মিলির৷ বিয়ের রাতে যখন নবদম্পতিরা ভবিষ্যত সুখি জীবনের গল্প সাজাতে ব্যস্ত থাকেন, তখনই একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেবার সিদ্ধান্ত নেন তারেক-মিলি দম্পতি৷
সদ্য বিয়ের পর সমুদ্রবিলাসে যাবার সিদ্ধান্ত নেন তারা! তবে সঙ্গে থাকবে বিয়ের পোশাক৷ তবে এ এক ভিন্ন বিলাস, যেখানে নিজেদের ভালোবাসা তারা ভাগ বাটোয়ারা করবেন প্রকৃতির সঙ্গে৷ অন্য মানুষের ফেলে যাওয়া আবর্জনা পরিষ্কারে নেমে পড়বেন কক্সবাজারের সৈকতে৷ আর ৫ আগস্ট সমুদ্র সৈকতের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নামেন তারা৷ কক্সবাজার আমাদের গর্বের জায়গা, ভালবাসার জায়গা, আবেগের জায়গা, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে পরিচিত করার জায়গা! কিন্তু জানেন লকডাউনের সময়ের এ জায়গার ঘটনা কি? এ বছরের মে মাসের দিকেই হলো এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। সমুদ্র থেকে ভেসে এলো ময়লা-আবর্জনার স্তুপ।
সমুদ্র তীরের ১০-১২ মাইল জায়গা ভরে গিয়েছিলো তখন বর্জ্যের স্তুপে। ভাবতে পারেন? দশ-বারো মাইল জায়গা জুড়ে শুধু ময়লা আর ময়লা? বিদেশের একটা মানুষের কাছে কোন মুখে আমরা বলি, কক্সবাজার আমাদের দর্শনীয় একটা জায়গা? লজ্জাও লাগেনা একটুও? ভাবুন— বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এক নবদম্পতি হানিমুন বাদ দিয়ে নামলেন সৈকতের আবর্জনা পরিষ্কারে৷ কাজটি করলেন বিয়ের পোশাকে, যাতে করে মানুষের নজরে আসেন এবং অন্যরা পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে উদ্বুদ্ধ হন৷
কাজটি তারা সংবাদের শিরোনাম হওয়ার জন্য করেননি, মন থেকেই করেছেন এবং মানুষজনকে সচেতন করতেই করেছেন ! চারদিন ছিলেন তারা, প্রতিদিনই বিচ এ ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে সেখানে কর্তৃপক্ষের দেয়া নির্ধারিত ডাস্টবিনে ফেলেছেন; তাও এক দুই বস্তা নয়, গুনে গুনে এমন পাঁচ বস্তা ময়লা সংগ্রহ করে ডাস্টবিনে ফেলেছেন! কাজের ফাঁকে ‘ক্লিন ওয়ার্ল্ড, গ্রিন ওয়ার্ল্ড’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে ছবি ও তোলেন তারেক ও মিলি। নব দম্পতির জন্য শুভকামনা, এরকম ভাল মানুষে ভরে উঠুক দেশ; করোনার লকডাউনের সময় ও মানুষকে খাবার পৌঁছৈ দিয়েছেন এ দম্পতি! আমরাও এ দম্পতির মত বলতে চাই— পৃথিবীটা আগের মত সুন্দর হোক, পরিষ্কার থাকুক, এতটুকুই চাওয়া৷