ট্রেন্ডিং খবরব্যবসা ও বাণিজ্যহোমপেজ স্লাইড ছবি
পাঠাও : এশিয়ার দ্রুত সম্প্রসারিত স্টার্টআপ

‘আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ র্স্পধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি,
আঠারো বছর বয়সেই অহরহ বিরাট দুঃসাহসেরা দেয় যে উঁকি।
তারুণ্যের শক্তি কতটা? আমরা আসলে কত দূর যেতে পারি? সুকান্তের কবিতায় আছে এই প্রশ্নের উত্তর। তারুণ্যের শক্তি অনন্ত। তারুণ্য মানে অসম্ভব কে সম্ভব করার দুরন্ত সাহস। তারুণ্যের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে বাংলাদেশের তরুনরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য সন্মান বয়ে আনছে। তরুনদের দুর্দান্ত আইডিয়া বদলে দিচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্যের সমীকরণ।তেমনি দুই তরুন হুসাইন এম ইলিয়াস এবং সিফাত আদনান। ২০১৫ সালে হুসাইন এম ইলিয়াস এবং সিফাত আদনানের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে পাঠাও। বর্তমানে কিছু কারনে ‘পাঠাও’ নিয়ে বিতর্ক হলেও আমাদের জানা প্রয়োজন তাদের শুরুটা কেমন দারুন ছিল এবং কতটা সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছিলো।
অবকাঠামোগত সমস্যা কমিয়ে বাস্তব ভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করা পাঠাও এশিয়ার দ্রুত সম্প্রসারিত স্টার্টআপ গুলোর অন্যতম। উদ্যোক্তাদের সাথে গ্রাহকদের সংযোগ ঘটানোর অনন্য প্লাটফর্ম পাঠাও, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যকে ত্বরান্বিত করছে। পাঠাও নামে তাদের ডেলিভারি সার্ভিস চালু ছিল। তারা আলিবাবা গ্রুপের দারাজ ও রকেট ইন্টারনেটের অংশ হিসেবে তাদের ই-বাণিজ্য সেবা প্রদান শুরু করে। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে পাঠাও তাদের রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করে। পাঠাও তাদের সেবাসমূহ একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পরিচালনা করে থাকে। পাঠাও রাইড শেয়ারিং সেবার পাশাপাশি ই-বাণিজ্য, কুরিয়ার ও খাদ্য সরবরাহ সেবাও দিয়ে যাচ্ছে। তারা তাদের অ্যাপটি আরও উন্নত করার জন্য বিভিন্ন সময়ে হালনাগাদ করে থাকে। দেশের অন্যতম অবকাঠামোগত সমস্যাকে কমিয়ে উন্নয়নের জন্যে এটি একটি বাস্তবধর্মী সমাধান হিসেবে ইতোমধ্যে প্রমাণ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে দেশে অনেকগুলো রাইড শেয়ারিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান তৈরিও নাগরিক সমস্যার সমাধান করেছে প্রতিষ্ঠান টি।
পাঠাও এমন একটি প্লাটফর্ম তৈরি করেছে যেখানে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং বাংলাদেশের কয়েক লক্ষ গ্রাহককে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তারা যখন নতুন কার্যক্রম চালু করেছিল তখন অনেকে এটিকে একটু আলাদা করে দেখেছে। অনেকেই মন্তব্য করেছে , এই ধরনের কার্যক্রম বেশিদিন চলবে না। তাদের এই সেবাটি সম্পূর্ণ স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ও গুগল ভিত্তিক। অনেকেই বলেছে, দেশে যথেষ্ট পরিমাণে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী নেই আবার যারা আছেন তারা ইন্টারনেট চালান না। তাহলে অ্যাপ ভিত্তিক ও ইন্টারনেট নির্ভর এই সেবা কীভাবে জনপ্রিয় হবে? তারা সেই প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠেছিলো।
স্টার্টআপ ব্যবসা সারা বিশ্বে গত কয়েক বছর ধরে আলোচিত শব্দ নতুন ব্যবসা ও উদ্যোগে। কিন্তু স্টার্টআপ এর সফলতার পাশাপাশিও রয়েছে ব্যর্থতা। সম্প্রতি পাঠাও খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । বিনিয়োগকারীরা তাদের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে। কিন্তু কেন এই ক্রাইসিস? পাঠাও সম্পর্কে নানা বিপরীত কথা বলা হলেও ভুলে গেলে চলবে না যে পাঠাও এই দেশের সর্ব বৃহৎ এবং সবচেয়ে সফল স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে যেমন বহু মানুষ কাজ পেয়েছে তেমনি সেবা পেয়েছে আরও কোটি মানুষ। বিশেষত জ্যামের শহর ঢাকায় কম সময়ে পৌঁছতে রাইড শেয়ারিং এর যে আইডিয়া পাঠাও এনেছে তা প্রশংসার যোগ্য। কুরিয়ার হিসেবেও তাদের সার্ভিস দারুন।
তবে ব্যবসার এই বিরাট বিস্তৃতি তাদের মধ্যে কিছু সমস্যা এনে দিয়েছে। তারুণ্যের শক্তির কথা দিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম। তারুণ্যের শক্তির প্রমাণ যেমন ‘পাঠাও’ রেখেছে, আশা করা যায় তারা খারাপ সময়ও কাটিয়ে উঠবে। তবে সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা, যুক্তিযুক্ত সমালোচনা, সচেতন ভোক্তা, দায়িত্বশীল মিডিয়া। আশা করা যায় এসবের সাহায্যে পাঠাও আবার তাদের সুদিনে ফিরে যাবে৷ কেননা, সেটা কেবল পাঠাও নয়, আমাদের সকলের জন্যেই মঙ্গলজনক।