জাতীয়হোমপেজ স্লাইড ছবি
বনানী অগ্নিকান্ড প্রসঙ্গে যে প্রশ্নগুলো সবার করা উচিত

সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু: যথেষ্ট হয়েছে, দয়া করে এবার থামুন!
পারলে প্রশ্ন করুন!
বনানীর আগুন দেখতে ভীড় করা আহাম্মক মানুষদের যথেষ্ট সমালোচনা করেছেন। দয়া করে এখন থামুন।
এবার অন্যদিকে নজর দিয়ে কিছু বলুন, প্রশ্ন করুন, যা কাজে লাগবে।
প্রশ্ন করুন!
এসব হাইরাইজ ভবনে Emergency Fire exit নেই কেন?
প্রশ্ন করুন,
এসব ভবনে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র এবং নিজস্ব অগ্নিনির্বাপন কর্মী থাকে না কেন?
প্রশ্ন করুন,
কেন, কোন কারনে, কাদের অবহেলা, দায়িত্বহীনতায় এক ভবনের আগুন পাশের দুটি ভবনে ছড়ানোর সুযোগ পায়?
প্রশ্ন করুন,
কি করে বহুতল ভবন নির্মাণের নিয়ম না মেনে প্রায় গায়ে গা লাগিয়ে বহুতল ভবন উঠবার সুযোগ পায়,এমন সুযোগ কেন দেয়া হয়?
প্রশ্ন করুন,
আগুন নেভানোর জন্য এসব এলাকায় পানির রিজার্ভার নেই কেন?
প্রশ্ন করুন,
ঢাকা শহর কেন জলাধার শূন্য?
প্রশ্ন করুন,
ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর জন্য প্রয়োজনীয় পানি পায় না কেন?
প্রশ্ন করুন,
ফায়ারসার্ভিসের জন্য অাধুনিক অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রের ব্যবস্থা হয় না কেন?
প্রশ্ন করুন,
ফায়ার সার্ভিসের ল্যাডারের সংখ্যা কম কেন,কেন এসব ল্যাডার ১৫ তলার উপরে যেতে সক্ষম নয়?
প্রশ্ন করুন,
আগুন নেভানোর মত প্রযুক্তিসক্ষমতা আছে এমন হেলিকপ্টার বা হালকা বিমান আমাদের নেই কেন?
ভুলে যান কেন, আগুন দেখতে আসা এই সব আহাম্মকেরাই দল বেঁধে রানা প্লাজার উদ্ধারতৎপরতায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
এমন ভীড় করা আহাম্মকেরাই প্রতিটি লঞ্চ,বাস দুর্ঘটনায় প্রথমেই জীবন বাজি রেখে উদ্ধারে নামে।
রানা প্লাজার তারেক কায়কোবাদের নাম মনে অাছে? কায়কোবাদও এমন আহাম্মকের দলে ছিল। উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গিয়েই লোকটা মরেছিল।
আরেকটি পাগলাটে তরুনের কথা মনে করুন। নামটা সম্ভবত বাবু। পুলিশ, ফায়ারব্রিগেড হাত লাগানোর আগে এবং পরে পাল্লা দিয়ে ডজনখানেক মানুষকে উদ্ধার করেছিল। সেও মরেছিল।
মনে অাছে নিমতলীর সেই বেড়াতে বের হওয়া তরুণকে, যে তার সদ্য পরিনীতা স্ত্রীকে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রেখে, ভীড় ঠেলে একটি শিশুকে আগুন থেকে উদ্ধার করে নিজেই পুড়ে মরেছিল।
মনে করুন শাজাহানপুর এলাকায় রেলওয়ের পরিত্যক্ত কুপে পরে যাওয়া একটি শিশুকে উদ্ধারের কাহিনী। ফায়ারব্রিগেড উদ্ধার অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করে চলে আসার পর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভীড় করা আবালেরাই শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল।
হ্যাঁ গতকাল বনানীতে এই উৎসুক মানুষের করার কিছু ছিল না। কোন পথ ছিলনা। নইলে এরা বসে থাকতো না। আমি নিশ্চিত বসে থাকতো না, কেউ না কেউ জীবনের ঝুঁকি নিতো। তারপরও এরা বসে থাকেনি, যতটুকু সুযোগ পেয়েছে উদ্ধারকর্মীদের সহায়তা করেছে। দোষ কি শুধু তাদের, কেন ভীড় জমতে দেয়া হল? ছত্রভঙ্গ করে সরিয়ে দেবার ব্যর্থতা কার?
লেখক: অধ্যাপক এবং সাংবাদিক।