বাণিজ্য বার্তা
বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ – এ ১৯টি সেরা উদ্ভাবন পুরস্কৃত

বাংলাদেশকে উদ্ভাবনের উচ্চশিখরে নিয়ে যেতে বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভ (বিআইসি) আয়োজন করলো ‘বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ যেখানে দেশের সেরা ১৯টি উদ্ভাবনী কাজকে পুরস্কৃত করা হয়। গতকাল রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে এক জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে এই পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। মাস্টারকার্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত এই অ্যাওয়ার্ডের আয়োজনে ছিলো বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম।
বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডের মূল লক্ষ্য ছিল এ দেশের উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত সংস্থাগুলোর সাফল্য এবং সৃজনশীলতার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সৃজনশীল উদ্ভাবনকে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে উদ্ভাবনী শক্তিকে উদ্দীপ্ত করে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশের ক্ষেত্রে উদ্যোগটি একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।
এ বছর নিয়ে দ্বিতীয় বছরের মতো আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ – এ ১১টি মূল বিভাগে মোট ২৫০টি মনোনয়ন জমা পড়েছিলো। বিজয়ী এবং বিশেষ উল্লেখ্য- এই দুই ক্ষেত্রে যথাক্রমে পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিজয়ীদের নির্বাচন করার জন্য অনুষ্ঠিত অধিবেশনে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা মনোনয়নগুলো মূল্যায়ন করা হয়। পণ্য, সেবা কিংবা প্রকিউরমেন্ট খাতে যেকোন ধরনের অগ্রগতি, তাদের নতুনত্ব, বাজারের চাহিদা ও অর্থনৈতিক প্রভাব- এ কয়েকটি মানদণ্ডের ওপর মনোনয়নগুলো মূল্যায়ন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। তিনি বলেন, ‘আমরা সহযোগিতায় বিশ্বাস করি, যা একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে আমাদের পরিচালিত করবে। আসুন আমরা সবাই মিলে এমন একটি সমন্বিত ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ে তুলি যেখানে সমস্ত লেনদেন ডিজিটালভাবে ঘটবে এবং লেনদেনে কোন বাধা সৃষ্টি হবেনা।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আগামী ১০ বছরে আমাদের দেশে যা হবে তা পরবর্তী ১০০ বছরের শক্তিশালী কাঠামো প্রদান করবে। আমরা এখন যে অবস্থানে রয়েছি তা বর্তমানে একটি চূড়ান্ত রুপান্তরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। তাই পরবর্তী অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করার জন্য আমাদের ব্যাপকভাবে উদ্ভাবন আনয়ন অত্যন্ত জরুরি।’
এবারের ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড-এর প্রধান ক্যাটাগরিগুলো ছিলো ক্ষেত্র-ভিত্তিক যেখানে বিবেচিত হয়েছে আর্থিক খাত, পোশাক খাত, স্বাস্থ্যসেবা, এসডিজি অন্তর্ভুক্তকরণ, প্রক্রিয়া, পণ্য উন্নয়ন, স্টার্টআপ, সামাজিক ও প্রযুক্তি খাত। এছাড়াও, মাস্টার অব রিইনভেনশন নামে একটি বিশেষ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো:
বিভাগ: বেস্ট ইনোভেশন- হেলথকেয়ার, বিজয়ী: সিমেড হেলথ লিমিটেড এবং অনারেবল মেনশন: বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড অনারেবল মেনশন; বিভাগ: বেস্ট স্টার্টআপ ইনোভেশন, বিজয়ী: গেজ টেকনোলজি লিমিটেড এবং অনারেবল মেনশন: হ্যালোটাস্ক লিমিটেড; বিভাগ: বেস্ট ইনোভেশন- অ্যাগ্রিকালচার সেক্টর, বিজয়ী: এমপাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড এবং অনারেবল মেনশন: লাল তীর সিড লিমিটেড; বিভাগ: বেস্ট সোশ্যাল ইনোভেশন, বিজয়ী: রমণী এবং অনারেবল মেনশন: টেন মিনিট স্কুল; বিভাগ: পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন (সিটিজেন সেন্টারড ইনোভেশন), বিজয়ী: অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এবং অনারেবল মেনশন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; বিভাগ: বেস্ট ইনোভেশন- ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর, বিজয়ী: ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড এবং অনারেবল মেনশন: গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড; বিভাগ: বেস্ট প্রসেস ইনোভেশন, বিজয়ী: হিসাব লিমিটেড এবং অনারেবল মেনশন: বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; বিভাগ: বেস্ট ইনোভেশন- প্রডাক্ট ডেভলপমেন্ট, বিজয়ী: বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন এবং অনারেবল মেনশন: বহু বাংলাদেশ লিমিটেড; বিভাগ: বেস্ট টেকনোলজি ইনোভেশন, বিজয়ী: হিসাব লিমিটেড; বিভাগ: বেস্ট ইনোভেশন- এসডিজি ইনোভেশন, বিজয়ী: লাল তীর সিড লিমিটেড; এবং বিভাগ: মাস্টার অব রিইনভেনশন, বিজয়ী: বেক্সিমকো এলপিজি।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আগে সেখানে আরও অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন সামিট ২০১৯’ যেখানে দেশি-বিদেশি বক্তারা কথা বলেন। সামিটে ছিলো ৩টি কি-নোট সেশন, ৩টি প্যানেল আলোচনা, ৪টি ইনসাইট সেশন, ১টি কেস স্টাডি এবং ১টি স্টার্টআপ স্টোরি, যেখানে দেশের শীর্ষস্থানীয় উদ্ভাবন বিশেষজ্ঞ এবং করপোরেট কর্মকর্তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
মাস্টারকার্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বিজনেস ইনোভেশন সামিট ও অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের একটি উদ্যোগ যার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম। অনুষ্ঠানটি আয়োজনে অংশীদার হিসেবে ছিলো অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন– এটুআই এবং সহযোগিতায় স্বপ্ন। আরও ছিলো গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্স, ঢাকা ব্যাংক ও জেনেক্স; স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে ছিলো বেসিস ও এমসিসিআই; ইভেন্ট পার্টনার- লে মেরিডিয়ান ঢাকা; টেকনোলজি পার্টনার – আমরা; ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার- গিকি সোশাল; মিডিয়া পার্টনার- ঢাকা ট্রিবিউন এবং পিআর পার্টনার- ব্যাকপেজ পিআর।