বিনোদন
বাংলা নাটকের আলোচিত ছয় অভিনেত্রী

হৃদয় সাহা: বাংলা নাটকের অভিনেত্রীদের কথা ভাবলেই চোখের সামনে ভাসে কোথাও কেউ নেই এর অভাগী মুনা, সংশপ্তকের ফুলমতি, নক্ষত্রের রাতের সব আগলে রাখা মনীষা কিংবা আজ রবিবারের চঞ্চল তিতলি ভাইয়া ও কংকা ভাইয়ার কথা। আহা, এই অভিনেত্রীদের যেমন সুন্দর মুখশ্রী তেমনি অসাধারণ অভিনয় আমাদের হৃদয়ে গেঁথে গেছে। নাটকে আমাদের বেশ কয়েকজন গুণী অভিনেত্রীদের বিচরণ এই দশকেও ছিল। যেকারণে আমরা বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভাল, শ্যাওলা, আয়েশা, আয়েশা, ফেরার পথ নেই থাকেনা কোনকালে, মিস শিউলীর মত নারী চরিত্র কেন্দ্রিক শক্তিশালী কাজ পেয়েছি। যে কয়জন অভিনেত্রী গত দশকের নাটককে আলোকিত করেছেন তাদের মধ্যে ছয় জন আলোচিত অভিনেত্রীর গল্প থাকছে আজকের পর্বে।
১.নুসরাত ইমরোজ তিশা: টেলিভিশন নাটকে জনপ্রিয়তম অভিনেত্রীদের একজন তিনি। গত দশকেই যে শুভসূচনা করেছিলেন সেটা এই দশকে এসে আরো সমৃদ্ধ করেছেন। বলতে গেলে বেশকয়েক বছর একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়েছেন। একদিকে গ্র্যাজুয়েট,মনফড়িঙের গল্প,ভালোবাসি তাই, আরমান ভাই সিরিজ, চাঁদের নিজের কোনো আলো নেইয়ের মত জনপ্রিয় কাজ যেমন করেছেন অন্যদিকে আয়েশা, রাতারগুল, ছিন্ন, বুকের ভিতর কিছু পাথর থাকা ভালোর মত পরিক্ষীত কাজ ও করেছেন। সিকান্দার বক্স সিরিজের কিছু পর্বেও তিনি ছিলেন। নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও ছিলেন বেশ সরব, দ্বিতীয়বারের মত জাতীয় পুরস্কার ও পেতে যাচ্ছেন গুনী এই অভিনেত্রী।
২.জয়া আহসান: এই মুহুর্তে দুই বাংলার চলচ্চিত্রে সবচেয়ে আলোচিত অভিনেত্রী তিনি, তবে এই প্রতিভাময়ী অভিনয়ের সূচনা টিভি নাটকেই। বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করে তিনি শীর্ষ অভিনেত্রী হয়েছিলেন। এই দশকেও শুরুতেও ছিল, সিনেমায় ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে নাটককে বিদায় জানালেও তাঁর সেই স্বল্প কাজগুলো ‘ফেরার কোনো পথ নেই থাকে না কোনো কালে, চৈতা পাগল, আমাদের গল্প, ভালোবাসি তাই ভালোবেসে যাই’ এখনো আলোচনার শীর্ষে।
৩.মেহজাবীন: ক্যারিয়ারের প্রতি একাগ্রতা থাকলে যে নিজেকে শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায় তাঁর অনন্য উদাহরণ হচ্ছেন এই অভিনেত্রী। এক সময় তাকে নিয়ে দর্শকদের মনোভাব সন্তোষজনক ছিল না কিন্তু ‘বড় ছেলে’র বিশাল সাফল্যের পর তিনি এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী। ছকের বাইরে গিয়েও নিজেকে ভেঙ্গেছেন ফেরার পথ নেই, এই শহরের মত টেলিফিল্মগুলোতে, এছাড়া বুকের বা পাশে, সোনালী ডানার চিল, তুমি না থাকলে, ভালোবাসা ১০১, হাতটা দাও না বাড়িয়ে, পতঙ্গর মত নাটক রয়েছেই।৪.অপি করিম: সমসাময়িকরা অনিয়মিত হয়ে গেলেও তিনি এখনো উজ্জ্বল আছেন অভিনয় জগতে। একেবারেই যে নিয়মিত ছিলেন তা নয়, তবে যখন ই পর্দার সামনে এসেছেন দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। গত দশকের জনপ্রিয়তা এই দশকে এসে আরো সমৃদ্ধ করেছেন গুণী এই অভিনেত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে ‘মিস শিউলি’ তে ভীষণ আলোচিত হয়েছেন, এছাড়া উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে খুঁটিনাটি খুনসুটি, এফ এন এফ,আলো, এই শহর মাধবীলতার না, পুরাঘটিত বর্তমান, কেস ৩০৪০, দরজার ওপাশে,অবাক ভালোবাসায়, পিছুটান, সুইজারল্যান্ড, কানামাছি ভোঁ ভোঁ অন্যতম।
৫.সুমাইয়া শিমু: বর্তমানে অভিনয় জগত থেকে দূরে থাকলেও এই দশকের শুরুতে তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। ‘স্বপ্নচূড়া’ খ্যাত এই অভিনেত্রী ললিতা, এফ এন এফ, বিহাইন্ড দ্য ট্র্যাপ, ফাঁদ ও বগার গল্প, একজন ছায়াবতী, রেডিও চকলেট, তক্ষক সহ আলোচিত ছিলেন এই প্রতিভাবান অভিনেত্রী। অনেকদিন বাদে সম্প্রতি ‘ওয়াটার’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন।
৬.তানজিন তিশা: মিউজিক ভিডিওর সুবাদে আলোচনায় আসা এই অভিনেত্রী বর্তমানে অভিনেত্রী হিসেবে ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। জনপ্রিয়তায় বেশ এগিয়ে থাকলেও অভিনয়ে উত্তরণ ঘটানো আরো জরুরী যদি নিজেকে সমৃদ্ধ করতে চান,পাশাপাশি নাটক নির্বাচনেও সচেতনতা প্রয়োজন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে এই শহরে কেউ নেই, লালাই,দেখা হবে কি?, একটি সুখবর, পেন্ডুলাম, এই বৈশাখে, বেস্ট ফ্রেন্ড ২ অন্যতম।