টেক গেজেটসটেক টকট্রেন্ডিং খবরপ্রযুক্তিহোমপেজ স্লাইড ছবি
বাজারের দ্রুততম অ্যান্ড্রয়েডঃ ওয়ান প্লাস ৭ প্রো রিভিউ

আব্দুল্লাহ আল মুনতাসির: ভুল শুনছেন না। স্যামসাং ও না কিংবা গুগল ও না। বাজারের দ্রুততম অ্যান্ড্রয়েডের খেতাব এখন ওয়ান প্লাস এর দখলে। ৭ প্রো ইজ দা ফাস্টেস্ট অ্যান্ড্রয়েড ইন দা মার্কেট। ওয়ান প্লাস আবারো তাদের খেল দেখিয়ে দিয়েছে। দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা বড় বড় কোম্পানির থেকে কোন অংশেই কম না এবং তারাও ফ্ল্যাগশিপ লেভেলের খেলায় পারদর্শী। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ওয়ান প্লাস ৭ প্রো তে উল্লেখযোগ্য নতুন কি কি ফিচার যোগ হয়েছে।
– নতুন ডিসপ্লে
– নতুন ক্যামেরা
– নতুন স্টোরেজ সিস্টেম
ডিসপ্লে- একটা ফোন হাত এ নেওয়ার পর পরই সবচেয়ে প্রথম আমরা যা লক্ষ্য করি তা হল এর ডিসপ্লে এবং এর ডিসপ্লে এক কথায় অসাধারণ। অসাধারণ বললেও কম হবে কারণ এটি এতোটাই সুন্দর। ওয়ান প্লাস ৭ প্রো তে দেওয়া হয়েছে ৬.৬৭ ইঞ্চির বিশাল ডিসপ্লে। ১৯.৫ঃ৯ এসপেক্ট রেশিওর ৩১২০x১৪৪০ রেজোলিউশান ফ্লুয়িড এমোলেড কিউএইচডি প্লাস ডিসপ্লেতে বেযেল একেবারেই নেই বললেই চলে। এযাবৎ কালের ওয়ান প্লাসের সবচেয়ে ভালো ডিসপ্লে বৈকি, বর্তমান অ্যান্ড্রয়েড বাজারের সবচেয়ে ভালো ডিসপ্লে বললেও ভুল হবেনা। থাকছে ডায়নামিক রেজোলিউশান যা আপনার ভিডিও অথবা গেমের রেজোলিউশানের উপর ভিত্তি করে ফোনের রেজোলিউশান কমিয়ে বাড়িয়ে নিবে, যার ফলে ব্যাটারি সেভ হয় অনেক অংশে। কোন রকম নচ ছাড়া এই ডিসপ্লের সবচেয়ে বড় ফিচার হল এর ৯০ হার্টস রিফ্রেশ রেট। এই রিফ্রেশ রেটে ফোন ব্যবহার কতটা স্মুথ বা আরামদায়ক লাগে তা বলে বোঝানো অসম্ভব। এটা শুধু নিজে ব্যবহার করেই বুঝতে হবে। কিন্তু এটা বলতে পারি যে ৯০ হার্টস রিফ্রেশ রেটে ফোনটি ব্যবহার করে যে স্মুথনেসটা পাবেন ও ফোনটি যতটা ফাস্ট লাগবে, তার অভিজ্ঞতা একবার হলে আর অন্য কোন ফোনে ফেরত যেতে ইচ্ছা করবেনা। ওহ, ডিসপ্লেটির সাইড এবার সামসাং গ্যালাক্সির মতো কার্ভ করে দেওয়া হয়েছে যা তেমন কাজের না হলেও দেখতে অসাধারণ লাগে।
বিল্ড- গ্লাস ও মেটালের স্যান্ডউইচ বডি খুবি প্রিমিয়াম একটা লুক দিয়েছে ওয়ান প্লাস ৭ প্রো কে। থাকছে লেটেস্ট স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫ প্রসেসর যা ৬জিবি/৮জিবি/১২জিবি র্যাম এর সাহায্যে এক লাইটনিং ফাস্ট ফোনের অভিজ্ঞতা এনে দেবে। স্টোরেজে থাকছে ১২৮ ও ২৫৬ দুটি ভার্শন কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিষয় হল এটি ইউএফএস ৩.০ স্টোরেজ সিস্টেম যা আগের ভার্শনগুলোর চেয়ে দিগুণ গতিতে আপনার ফোনের ইনফর্মেশন লিখতে বা পড়তে পারবে। ফাস্ট রিডিং অ্যান্ড রাইটিং ক্যাপাবিলিটির সাথে যখন এই পরিমাণ র্যাম, লেটেস্ট প্রসেসর ও ৯০ হার্টসের ডিসপ্লে যোগ হয় তখন এই ফোন হয়ে ওঠে স্পিড ডিমন। সাথে ডিসপ্লের উপর থাকছে অপটিকাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার যা আগের ভার্শনের ফোনগুলোতে এমনিতেই ফাস্ট ছিল, এখন আরও ফাস্ট হয়েছে। থাকছে ইউএসবি সি ৩.১। অক্সিজেন ওএস চলবে অ্যান্ড্রয়েড ৯ পাই এর অপর। স্পিকার নিয়ে মানুষের অভিযোগ অবশেষে শুনেছে ওয়ান প্লাস। ডলবি অ্যাটমসের সাথে স্টেরিও স্পিকারের সমন্বয়ে ভালো মিডিয়া এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যাবে এ ফোনে। যদিও কোন ওয়ারলেস চার্জিং ও হেডফোন জ্যাক না থাকার বেদনা থেকেই যাচ্ছে। আইপি সার্টিফিকেশান এবারো নেই যা দুঃখজনক।
ক্যামেরা- বরাবরই ওয়ান প্লাসের ঘাটতি ছিল এই বিভাগে। এবভ এভারেজ পারফরমান্স দিয়ে কি ফ্ল্যাগশিপ বানানো যায় বলেন? তাই এবার ক্যামেরাতে কার্পণ্য করেনি ওয়ান প্লাস। ৩টি ক্যামেরার সেটাপ নিয়ে সাজানো হয়েছে ওয়ান প্লাস ৭ প্রো। ৪৮ মেগাপিক্সেলের মেইন, ১৬ মেগাপিক্সেলের আলট্রা ওয়াইড ও ৮ মেগাপিক্সেলের ৩xজুম টেলিফটো লেন্স থাকছে এই সেটাপে। গুগল পিক্সেলের মতো ক্যামেরা পারফরমান্স না দিতে পারলেও আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে এই বিভাগে। নচলেস ডিসপ্লে পাওয়ার জন্য সেলফি ক্যামেরাকে ফোনের ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে যা একটি মোটরের সাহায্যে বের হবে। সেলফি ক্যামেরা বের হওয়া অবস্থায় হাত থেকে পরে যেতে নিলে মাটিতে পড়ার আগেই সেলফি ক্যামেরাটি আবার ভিতরে ঢুকে যাবে, এমন টেকনোলজি ওয়ান প্লাস রেখেছে এই ফোনে, তাই চিন্তাহীন থাকতে পারেন।
ব্যাটারি ও দাম- ৪০০০ মিলিয়াম্প এর ব্যাটারি থাকছে যা ওয়ান প্লাসের ওয়ার্প চার্জ এর সাহায্যে ৩০ মিনিটে ৫০% চার্জ হতে সক্ষম। সুপারফাস্টই বলা চলে তাই ওয়ারলেস চার্জিং এর অনুপস্থিতি তেমন একটা কষ্ট দেবেনা। ফুল চার্জে ৬-৭ ঘণ্টা স্ক্রিন অন টাইম পাওয়া যাবে অনায়াসে। ফোনটি পাওয়া যাবে মিরর গ্রে, আমন্ড ও আমার পার্সোনাল ফেভরিট নেবিউলা ব্লু এই তিনটি রঙ এর ম্যাট ফিনিশে। ৬জিবি র্যাম, ১২৮জিবি স্টোরেজের দাম ৬৬৯ মার্কিন ডলার; ৮জিবি র্যাম, ২৫৬জিবি স্টোরেজের দাম ৬৯৯ মার্কিন ডলার এবং ১২জিবি র্যাম, ২৫৬জিবি স্টোরেজের দাম ৭৪৯ মার্কিন ডলার করে রাখা হয়েছে।