বিনোদনসিনেমা ও টেলিভিশনহোমপেজ স্লাইড ছবি
‘বার্ড অফ ব্লাড’ কেন দেখবেন?

মাহমুদুর রহমান: দুনিয়া মাতাচ্ছে নেটফ্লিক্স। সে যাত্রায় ভারত যোগ হয়েছে বছর দুয়েকের বেশি হলো। দিয়েছে ‘স্যাক্রেড গেমস’-এর মতো সিরিজ। পাশপাশি চমৎকার কিছু সিনেমা। সে যাত্রায় নেটফ্লিক্সের সাথে যোগ দিয়েছেন শাহরুখ খান। তবে কোন সিরিজ বা সিনেমায় অভিনেতা হিসেবে নন। প্রযোজক হিসেবে আছেন তিনি। তৈরি করেছেন ‘বার্ড অফ ব্লাড’ নামে একটি স্পাই থ্রিলার সিরিজ।
২০১৫ সালে বিলাল সিদ্দিকি নামে এক তরুণ একটি থ্রিলার লিখে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেন। নেটফ্লিক্স এবং রেড চিলিস সেই গল্পকেই বেছে নিলো সিরিজ করার জন্য। ভারতীয় তিন এজেন্টকে বেলুচিস্তান থেকে উদ্ধার করে আনতে এক মিশনে যায় কবির আনন্দ। সেখানে যোগ দেয় ভির এবং ইশা। কিন্তু মিশনে গিয়ে একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকে। যে কোন স্পাই থ্রিলারের কমন বিষয় এগুলো। তাহলে ‘বার্ড অফ ব্লাড’ কেন দেখবেন?
নেটফ্লিক্স আর শাহরুখ খান ফিরিয়ে এনেছেন বলিউডের এমন এক অভিনেতাকে যার পরিচয় ‘সিরিয়াল কিসার’। চুম্বন বিশারদ এমরান হাশমি যখন একজন তুখোড় স্পাইয়ের চরিত্র করেন, তখন সে সিরিজ দেখতে হয়। এবং আপনি এই সিরিজ দেখলে বুঝতে পারবেন রোমান্টিক সিনেমার বাইরেও এমরানের অভিনয় দক্ষতা অনেক বলিউড নায়কের চেয়ে বেশি।
‘মেড ইন হেভেন’ এর পর শোভিতাকে দেখা যাবে এখানে। আছেন ভিনিত কুমার সিং। মজার ব্যপার হলো এই সিরিজে চমৎকার কাজ করেছেন ভিনিত। আর তার চরিত্রটি এমন যাকে এজেন্সি ভুলে গেছে। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি থেকে ভুলে যাওয়া ভিনিতের আসলে গল্পটাও এমনই।
‘বার্ড অফ ব্লাড’ অন্য সব স্পাই থ্রিলারের মতো মারদাঙ্গা নয়। এমনকি ‘স্যাক্রেড গেমস’ এর মতো এক এপিসোড ক্লিফ হ্যঙ্গারে রেখে শেষ করার চেষ্টাও ততোটা ছিল না। বরং গল্পের মাঝে গল্প দিয়ে একটা শৈল্পিক উপস্থাপনার চেষ্টা করা হয়েছে। কবিরের সরে যাওয়া, বন্ধুর মৃত্যুতে তাঁর নিজেকে দোষী মনে করা, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা নিয়ে গল্প যখন এগিয়ে যায় তখন যুক্ত হয় প্রেম, বন্ধুত্ব বিশ্বাসের দৃশ্যায়ন।
এই সিরিজের সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হলো ধুম ধারাক্কা অ্যাকশন, একের পর এক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব না থাকা। যারা একটু স্লো ধরণের গল্প পছন্দ করেন বার্ড অফ ব্লাড তাদেরই জন্য।
সিরিজের আরেকটি ভালো দিক হলো শুটিং লোকেশন। বালুচিস্তান, কোয়েটা, কেচের মতো জায়গাকে চমৎকার ভাবে তুলে আনা হয়েছে। পাথুরে বাড়ি আর সেখানকার মানুষের আবেগের কথাও আছে।
কিছু জিনিস আরও বিস্তারে আসতে পারত, কিন্তু কোন কারণে আনা হয়নি। সেখানে কিছু খামতি থেকে গেলেও একটা ভালো লাগা থাকে। এবং একদম শেষে গল্প এমন একটা মোড়ে এসে সমাপ্ত হয়েছে যে পরবর্তী সিজনের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। রহস্য সমাধানের জন্য হলেও দেখতে হবে ‘বার্ড অফ ব্লাড’।