জাতীয়
যার সিনেমা ছিলো সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার

‘সিনেমার কাজ মনযোগানো না, মন জাগানো। ফিল্ম মানে ফুল নয়, অস্ত্র।’ – ঋত্বিক ঘটক
খুব বেশী একটা বাংলা সিনেমা দেখা হয় না এখন। তবে আমার খুব বেশী পুরোনো ছবি দেখার বাতিক আছে। কারন এখন আর আগের মতোন সৃজনশীল বাংলা সিনেমা খুব একটা দেখা যায় না। বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগ ছিলো অনেককাল আগে। মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায় কিংবা ঋত্বিক ঘটকের সমকার সিনেমাগুলোতে আবহমান বাংলার যে রূপ দেখা যেতো তা কালে কালে গ্রাস করে নিচ্ছে নগ্নতা।
একজন সত্যিকারের বাঙালি ঋত্বিক ঘটক। মানুষটা বাংলা সিনেমাকে যতটা উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তার ছটাক ও মনে হয় দেখা যাবে না পরবর্তী কয়েক শতাব্দীতে। ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘সুবর্ণরেখা’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ অথবা তাঁর নিজের জীবন নিয়েই সৃষ্টি করা ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’। এই সিনেমাগুলোতে সাধারন মানুষের কথা যতবার উঠে এসেছে ততবার আর কেউই হয়তো বলতে পারে নি।
মানুষটার রাজনীতির প্রতি ভালোবাসা থাকার কারনেই হয়তো ইনকাম ট্যাক্স অফিসারের চাকরি টা ছেড়ে চলে এসেছিলেন। তবে জুতসই হয়নি রাজনীতি ও। আমার খুব বড় একটা ভুল ধারনা ছিলো যে রাজনীতি আর শিল্প কখনো একমনে ধারন করা যায় না। তবে ঋত্বিক ঘটক আর আসাদুজ্জামান নূর কে দেখেই পরিবর্তন হয়েছে ধারনার।
সংসারের টানপোড়নের সময় স্ত্রীকে বলেছিলেন, ‘লক্ষ্মী, টাকাটা তো থাকবে না, কাজটা থাকবে। তুমি দেখে নিও, আমি মারা যাওয়ার পর সব্বাই আমাকে বুঝবে।’
সবাই আসলেই বুঝতে পেরেছে মানুষটাকে দেরীতে হলেও মানুষটা আজীবন সবাইকে হাসি কান্নার খোরাক জোগালে ও নিজের শেষ সময়টা কাটিয়েছেন বিশৃঙ্খলায়। প্রিয়জনের শূন্যতা আর একাকিত্বে। মদ আর মানসিক হাসপাতাল এই নিয়েই চলে গেলেন এই সৃষ্টিশীল মানুষটা।
আজ ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন। ‘২৫ এর এই দিনে নক্ষত্র নেমে আসা মতো করে তিনি ও এসেছিলেন। ভারতবর্ষকে সমৃদ্ধ করতে। শুভ জন্মদিন বাঙালির আবেগ ঋত্বিক ঘটক।