ক্রিকেটখেলাহোমপেজ স্লাইড ছবি
যেভাবে রচিত হলো বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস

এস.কে.শাওন: স্মৃতির পাতায় ধুলো ঝাড়লে দেখা যায় ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল মানেই তীরে এসে তরী ডুবায় বাংলাদেশ! বড়রা নিদাহাস ট্রফি ও এশিয়া কাপের ফাইনালে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও শেষ পর্যন্ত পরাজয়কে সঙ্গী করে মাঠ ছেড়েছে।যুবারা ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালে মাত্র ২ রানে পরাজিত হয়। কিন্তু এবার ভারত জুজু কাঁটিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে ভারতকে ডিএল মেথোডে ৩ উইকেটে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় আকবর আলীর দল। অর্থাৎ বিশ্ব জয়ের মাধ্যমে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নিলো বাংলাদেশ।
সাউথ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে শক্তিশালী ভারতকে ১৭৭ রানে আটকে ফেলে বাংলার যুবারা। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেন নেন অভিষেক দাস। সমান দুটি করে উইকেট পান তানজিম সাকিব ও শরীফুল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো ছিল বাংলাদেশের। দলীয় ৫০ রানে পারভেজ ও তানজিদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন রবি বিশনয়। বলে ১৭ রান করে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন তানজিদ। ওয়ানডাউনে নামা জয় মাত্র ৮ রানে বিদায় নিলে ভয় বাড়তে থাকে বাংলাদেশের। দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর ওপেনার পারভেজ চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। এ যেন ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’! তারপর লেগ স্পিনার বিশনয় যুবাদের ব্যাটিং অর্ডারকে বিষিয়ে তোলেন। পরপর ২ ওভারে ২ জনকে ফেরান এই তরুণ তুর্কি। তৌহিদ হৃদয় রানের খাতা না খুলতে পারেননি। আর শাহাদাত হোসেন বিদায় নেন মাত্র ১ রান করে।
৬৫ রানে ৪ উইকেট পতনের পর ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন কাপ্তান আকবর। তিনি শামীম হোসেনের সঙ্গে ২০ রানের জুটি গড়েন। সেই জুটি ভাঙেন ভারতের সুশান্ত মিশ্র। শামীম ১৮ বলে ৭ রান করে জয়সাওয়ালের তালুবন্দী হন। দুইবার জীবন পাওয়া অভিষেক মাত্র ৫ রানে আউট হন। ১০২ রানে ৬ উইকেটের পতনে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ফলে ভক্তদেরও হতাশা বাড়তে থাকে। তখন আবারও ক্রিজে নামেন চোট পাওয়া পারভেজ। আকবর আর পারভেজ মিলে ৪১ রানের জুটি গড়ার সুবাদে ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ। এ যেন ভক্তদের জন্য পোড়া ঘায়ে শীতল পরশ! পারভেজ ৭৯ বলে ৪৭ রান করে জয়সাওয়ালের শিকার হলে মাঠে নামেন রাকিবুল।
আকবর আর রাকিবুল মিলে মন্থর গতিতে ব্যাট করতে থাকেন। ধীরে ধীরে বাংলাদেশ যখন জয়ের দাঁড়প্রান্তে তখনই বেরসিক বৃষ্টির বাগড়া। বৃষ্টি নামার পূর্বে বাংলাদেশের দরকার ছিল ৫৪ বলে ১৫ রান। বৃষ্টি শেষে ডিএল মেথোডে তা দাঁড়ায় ৩০ বলে ৭ রানের সমীকরণে। ২৩ বল হাতে রেখেই বিজয়োৎসবে মেতে উঠে বাংলাদেশ। ৪৩ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচসেরা হন আকবর আলী। বিশ্বকাপে বড়দের সাফল্য কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত। আর ছোটদের ছিল সেমিফাইনাল পর্যন্ত। কিন্তু এবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে সাফল্যের চূড়ায় উঠলো ছোটরা। আরও একটি আনন্দের ব্যাপার হলো এই বিশ্বকাপে কোন ম্যাচ হারেনি যুবারা। বৃষ্টিতে শুধুমাত্র একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল। সুতরাং অপরাজিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। নতুন বার্তার পক্ষ থেকে অপরাজিত বিশ্বসেরাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।