ট্রেন্ডিং খবরপ্রযুক্তিহোমপেজ স্লাইড ছবি
হুয়াওয়েই এর সামনে অ্যাপল এর হার?

আব্দুল্লাহ আল মুনতাসির: সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে চীনা নাগরিকেরা যুক্তরাষ্ট্রীয় ও কানাডীয় পণ্য বর্জন করছেন। ফেলে দিচ্ছেন তাদের হাতের আইফোন। ভেঙ্গে ফেলছেন তাদের ফোন ও তা শেয়ার করছেন গণমাধ্যম ওয়েবসাইট গুলোতে। দেখা যায় তারা যুক্তরাষ্ট্রের মোবাইল ফোন, বিশেষত অ্যাপল এর আইফোন ভেঙ্গে ফেলছেন এবং দেশীও হুয়াওয়েই এর ফোন কিনছেন। কি এর কারণ? হঠাত হুয়াওয়েই এর প্রতি চীনা নাগরিকদের ঝুঁকে পরার রহস্য কি?
ডিসেম্বর মাসেই হুয়াওয়েই প্রতিষ্ঠাতার কন্যা ও সিএফও মেং ওয়াংঝো কে কানাডা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে গ্রেফতার করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পরার পরই চীনা নাগরিকরা ও চীনা ছোট ছোট দেশীও কোম্পানিরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সঠিক কারণ না দর্শীয়ে বিদেশি মাটি থেকে এমন উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তার গ্রেফতারে দেশীও বিভিন্ন কোম্পানি তাদের কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পণ্য বর্জন করার অনুরোধ করে। দেশিও বিভিন্ন কোম্পানি শতকরা ১৫ থেকে ২০ ভাগ ভর্তুকি দিবে বলে তাদের কর্মচারীদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যেন তারা অ্যাপল এর পণ্য বর্জন করে দেশী হুয়াওয়েই এর পণ্য কিনতে আগ্রহী হয়। এমনকি কিছু কোম্পানি তো অ্যাপলের পণ্য ক্রয় করলে কর্মচারীদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি হবেনা ও কোন রকম উৎসব বোনাস পাবেনা বলে জানিয়ে দেয়। যদিও কোনও বড় কোম্পানি বা সরকারী বিভাগগুলি জনসমক্ষে যুক্তরাষ্ট্রীয় পণ্য বর্জনে অংশগ্রহণ করেনি। তবুও বলা যায় যুক্তরাষ্ট্র ও চায়নার মধ্যকার চলমান বাণিজ্য যুদ্ধে কিছু না কিছু লাভ ক্ষতির সম্মুখীন দুই দেশের কোম্পানিই হবে।
প্রথম বারের মতো কোন উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তার গ্রেফতারে একটি কোম্পানির ক্ষতির চেয়ে বেশী লাভই হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তাদের ফোনের বাজার আগের চেয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠছে যার ফলশ্রুতিতে তাদের নতুন ফোন গুলো বিনামূল্যে প্রচারণা পাচ্ছে। তাদের কোম্পানিও বিনামূল্যে মানুষের সামনে প্রচার হচ্ছে বার বার। দেশীও কোম্পানি হিসেবে হুয়াওয়েইকে যে কোন মূল্যে সাহায্য করতে প্রস্তুত অন্যান্য দেশীও কোম্পানিরা, যার ফলে বিক্রিও আগের চেয়ে বেশীই হবে বলে ধারণা করা যায়। মোট কথা ব্যবসায়িক দিক থেকে হুয়াওয়েই এর ক্ষতির চেয়ে বেশী লাভই হয়েছে।
তবে অনেকে ধারণা করছেন সাম্প্রতিক হুয়াওয়েই সংশ্লিষ্ট সকল ঘটনাই আসন্ন ৫জি টেকনোলজি খাতে চায়নাকে পেছনে ফেলে দেওয়ার জন্য তৈরি ষড়যন্ত্র। বলা বাহুল্য যে ৫জি খাতে চায়না অন্যান্য যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল। ২০১৫ সাল থেকে চায়না ওয়ারলেস যোগাযোগ খাতে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার বেশী বিনিয়োগ করে। তৈরি করে প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজারের মতো অবকাঠামো যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি হয় ৩০ হাজারেরও কম। আগামী ৫ বছরের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় চায়নার প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলার ৫জি সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যয় করার কথাও শোনা যায়। আর টেলিযোগাযোগ ও ওয়ারলেস খাতে চায়নার সবচেয়ে বড় প্রাইভেট কোম্পানি হল হুয়াওয়েই তাই যেকোনো মূল্যে তাদের দমিয়ে রাখা ও চায়নার এই ৫জি থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ বলে অনেকে ধারণা করছেন।